ডেঙ্গুতে রেকর্ড মৃত্যুর ঝুঁকিতে বাংলাদেশ!

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে অকল্পনীয় দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু। বর্ষার এই মাঝামাঝি সময়ে দেশজুড়ে আক্রান্ত-মৃত্যুর যে পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে, তাতে চলতি বছরই বাংলাদেশ ডেঙ্গুতে রেকর্ড মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।


গত বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে প্রতি বর্ষায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। ২০০০ সাল থেকে সরকারিভাবে প্রত্যেক বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত-মৃতের সংখ্যার হিসেব রাখা হচ্ছে। সেই হিসেব অনুসারে, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটেছে ২০২২ সালে, অর্থাৎ গত বছর। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ওই বছর ডেঙ্গুতে দেশজুড়ে মারা গিয়েছিলেন ২৮১ জনের এবং আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬২ হাজার ৪২৫ জন।
আরও পড়ুন>> পানির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হতে গিয়ে খুন হন অলিউল্লাহ : র্যাব
কিন্তু চলতি বছর বর্ষার মাঝামাঝি সময়েই ডেঙ্গুতে দেশজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ২০১ জনে এবং এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। যারা মারা গেছেন, তাদের অর্ধেকেরও বেশি রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকার।ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে উপচে পড়ছে ডেঙ্গু রোগী। অনেক হাসপাতালে আর নতুন রোগী ভর্তি হওয়ার জায়গা নেই। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সবাই ব্যাপক জ্বর, হাড়ের সন্ধিতে ব্যাথা, বমি ইত্যাদি উপসর্গে ভুগছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
প্রাণঘাতী রোগ ডেঙ্গুর একমাত্র বাহক এডিস মশা। প্রতি বছর জুন থেকে সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঘটে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। এই রোগের কোনো টিকা, ওষুধ কিংবা বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত চিকিৎসাপদ্ধতি এখনও আবিষ্কার হয়নি। তবে ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ার পরপরই যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করলে এই রোগে মৃত্যুর আশঙ্কা ৯০ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পায়। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, বর্ষার শুরু থেকে রাজধানীসহ দেশজুড়ে মশক নিধন ও ডেঙ্গু রোগ বিষয়ক গণসচেতনতা বৃদ্ধি করতে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে দেশের সরকার।
অন্যান্য খবর>> নয়াপল্টনে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি, সতর্ক বিএনপির নেতাকর্মীরা


বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবিএম আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, ডেঙ্গু যত দ্রুত শনাক্ত হয়—রোগীর ভোগান্তিও তত কম হয়। তাই জ্বর হলে দ্রুত ডেঙ্গু টেস্ট করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ‘এডিস মশার রূপান্তর ঘটেছে। বর্তমানে যে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যাচ্ছে, সেটি গুরুতর কোনো শারীরিক উপসর্গ সৃষ্টি করে না। তবুও সাধারণ লোকজনের প্রতি আমাদের পরামর্শ থাকবে, জ্বরজারি হলে তারা যেন দ্রুত ডেঙ্গু টেস্ট করান। কারণ যত দ্রুত এই রোগ শনাক্ত হয়, এটি থেকে মুক্তি পাওয়াও তত সহজ হয়,’ রয়টার্সকে বলেন আবদুল্লাহ।
দৈনিক পুনরুত্থান / স্টাফ রিপোর্টার
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আপনার মতামত লিখুন: