প্যারিসে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে নারীর নজিরবিহীন কারাদণ্ড
ফ্রান্সে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, নির্যাতন এবং হত্যার দায়ে এক আলজেরীয় নারীকে শুক্রবার প্যারোলবিহীন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন একটি ফরাসি আদালত। এর ফলে তিনিই হলেন এই সর্বোচ্চ শাস্তি পাওয়া প্রথম নারী।
২৭ বছর বয়সী দাহিয়া বেনকিয়েরেডকে ২০২২ সালে প্যারিসে ১২ বছর বয়সী লোলা ডেভিয়েটকে হত্যার জন্য ‘অপরিবর্তনীয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড’ দেওয়া হয়। এই ঘটনাটি দেশকে স্তম্ভিত করেছিল এবং যেহেতু ওই নারীর ফ্রান্সে থাকার অধিকার ছিল না, তাই এটি অভিবাসনবিরোধী উত্তেজনাও সৃষ্টি করেছিল।
এই শাস্তি হলো ফরাসি দণ্ডবিধির অধীনে সবচেয়ে কঠোর। রায় ঘোষণার পর লোলার মা ডেলফিন ডেভিয়েট বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচারে বিশ্বাস রেখেছিলাম এবং তা পেয়েছি।’
উত্তর-পূর্ব প্যারিসে লোলা ডেভিয়েট নিখোঁজ হওয়ার পর বেনকিয়েরেডকে আটক করা হয়। পরে তার মা-বাবা যে ভবনে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করতেন, সেই ভবনের লবিতে একটি ট্রাংকের মধ্যে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়।
রায়ে বিচারক ‘অপরাধমূলক কাজের চরম নিষ্ঠুরতা’কে উদ্ধৃত করেন, এটিকে ‘প্রকৃত নির্যাতন’ এবং ‘সম্পূর্ণ অমানবিকতা’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, ‘উপযুক্ত শাস্তি নির্ধারণের ক্ষেত্রে, আদালত এই সহিংস এবং প্রায় বর্ণনাতীত পরিস্থিতিতে শিকার এবং তার পরিবারের অপূরণীয় মানসিক ক্ষতির বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়েছেন।’
পাবলিক প্রসিকিউটর এর আগে দিনের বেলায় যুক্তি দিয়েছিলেন, বেনকিয়েরেডকে ‘অপরিবর্তনীয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড’ দেওয়া উচিত, কারণ এটি অপরাধের ‘চরম গুরুত্ব’ এবং তার পরিবারের ‘দুর্ভোগ’-এর প্রতিফলন ঘটায়।
রায় ঘোষণার পর লোলার ভাই থিবো ডেভিয়েট বিচারব্যবস্থাকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা আমার বোনের স্মৃতিকে পুনরুদ্ধার করেছি, আমরা সত্যকে পুনরুদ্ধার করেছি।’
১৯৯৪ সালে এই সর্বোচ্চ শাস্তি প্রবর্তনের পর থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র চারজন পুরুষ এই একই শাস্তি পেয়েছেন।
যাদের এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে, তারা তাত্ত্বিকভাবে ৩০ বছর পর প্যারোলের জন্য আবেদন জানানোর ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করার জন্য বিচারকের কাছে অনুরোধ করতে পারেন।
দৈনিক পুনরুত্থান /
- বিষয়:
- প্যারিস
- স্কুলছাত্রী
- ধর্ষণ
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
আপনার মতামত লিখুন: