• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২

Advertise your products here

  1. জাতীয়

একটি রক্ত পরীক্ষায় শনাক্ত করা যাবে ৫০টিরও বেশি ধরনের ক্যান্সার


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০২:৩৪ পিএম
একটি রক্ত পরীক্ষায় শনাক্ত করা যাবে ৫০টিরও বেশি ধরনের ক্যান্সার

একটি রক্ত পরীক্ষায় শনাক্ত করা সম্ভব হতে পারে ৫০টিরও বেশি ধরনের ক্যান্সার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য।

উত্তর আমেরিকায় প্রায় এক বছর ধরে পরিচালিত একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই রক্ত পরীক্ষা ক্যান্সারের বহু ধরন সঠিকভাবে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। এগুলোর তিন-চতুর্থাংশ ধরনের জন্য বর্তমানে কোনো স্ক্রিনিং কর্মসূচিই নেই।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, শনাক্ত হওয়া ক্যান্সারের অর্ধেকেরও বেশি ছিল প্রাথমিক পর্যায়ে। এতে করে এই সংক্রমণের চিকিৎসা তুলনামূলকভাবে সহজ এবং রোগ সারিয়ে তোলার সম্ভাবনাও বেশি।

‘গ্যালেরি টেস্ট’ নামের এই পরীক্ষাটি তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্রেইল। টেস্টটি বর্তমানে যুক্তরাজ্যের এনএইচএস-এর উদ্যোগে পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হচ্ছে।

গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ২৫ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক অংশ নেন। তাদের মধ্যে প্রায় ১ শতাংশের পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসে। এর মধ্যে ৬২ শতাংশ ক্ষেত্রেই পরে ক্যান্সার ধরা পড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির বিকিরণ চিকিৎসা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও গবেষণার প্রধান নিমা নবাভিজাদেহ বলেন, ‘এই রক্ত পরীক্ষা আমাদের ক্যান্সার শনাক্ত করার পদ্ধতিতেই মৌলিক পরিবর্তন আনতে পারে।

আমরা ক্যান্সারকে অনেক আগেভাগে ধরতে পারব, যখন চিকিৎসার সাফল্যের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।’

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ক্যান্সারবিহীন ছিলেন, তাদের মধ্যে ৯৯ শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে পরীক্ষা সঠিকভাবে ‘নেগেটিভ’ ফল দেখিয়েছে।

ব্রেস্ট, অন্ত্র ও সার্ভিক্যাল স্ক্রিনিংয়ের সঙ্গে এই রক্ত পরীক্ষা যুক্ত করলে সামগ্রিকভাবে শনাক্ত হওয়া ক্যান্সারের সংখ্যা সাতগুণ বেড়েছে।

সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো, ডিম্বাশয়, লিভার, পাকস্থলী, মূত্রথলি ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের মতো শনাক্ত হওয়া তিন-চতুর্থাংশ ক্যান্সারের কোনো স্ক্রিনিং পদ্ধতি বর্তমানে নেই।

এ ছাড়া, পরীক্ষাটি ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই ক্যান্সার কোথা থেকে উৎপত্তি হয়েছে তা সঠিকভাবে শনাক্ত করতে পেরেছে।

 

তবে, সব বিজ্ঞানী এখনও পুরোপুরি আশ্বস্ত নন। তাদের মতে, এই পরীক্ষায় মৃত্যুহার কমে কিনা, তা নিশ্চিত করতে আরও দীর্ঘমেয়াদি ও বৃহৎ পরিসরের গবেষণা প্রয়োজন।

এখন যুক্তরাজ্যের তিন বছরব্যাপী ১ লাখ ৪০ হাজার রোগীকে নিয়ে করা এনএইচএস ট্রায়ালকে ঘিরে সবচেয়ে বড় আশা দেখছেন গবেষকরা। এর ফল প্রকাশিত হবে আগামী বছর। যদি ফল ইতিবাচক হয়, এনএইচএস আরও ১০ লাখ মানুষের ওপর এই পরীক্ষা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করেছে।

গ্রেইলের বায়োফার্মা বিভাগের প্রেসিডেন্ট স্যার হারপাল কুমার বলেন, ‘অধিকাংশ ক্যান্সার রোগী মারা যান দেরিতে শনাক্ত হওয়ার কারণে। আমাদের লক্ষ্য হলো, যতটা সম্ভব আগে রোগ শনাক্ত করে সফল চিকিৎসার সুযোগ বাড়ানো।’

তবে সতর্কতার সুরও আছে। ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে–এর নাসের তুরাবি বলেন, ‘এই ধরনের পরীক্ষায় এমন ক্যান্সারও শনাক্ত হতে পারে যা হয়তো কখনোই ক্ষতিকর হতো না। তাই অতিরিক্ত রোগ নির্ণয়ের ঝুঁকি বিবেচনা করাও জরুরি।’

দৈনিক পুনরুত্থান /

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন