দলের দুঃসময়ে কারাবরণ করা কর্মীকে বাদ দিয়ে জুয়াড়ি আমানকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক

রাজধানীর বাড্ডায় বিএনপির দুঃসময়ে দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভাবে নেতৃত্ব দেওয়া কর্মীকে বাদ দিয়ে জুয়াড়ি আমান নামে এক ব্যক্তিকে বাড্ডা থানা শ্রমিক দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক এর দায়িত্ব দেওয়ায় হয়েছে বলে এক বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়।এমন ঘটনায় দুঃসময়ে কারাবরণ করা ত্যাগী নেতাকে উপেক্ষা করে জুয়াড় আসর নিয়ন্ত্রককে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নিয়োগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে ক্ষোভে ফুঁসছে তৃণমূল।ঢাকা মহানগর উত্তর বাড্ডা থানা শ্রমিক দলের রাজনীতিতে চরম হতাশা ও ক্ষোভের সঞ্চার তৈরি হয়েছে।সম্প্রতি ঘোষিত এক দলবদলকারী বিতর্কীত শ্রমিক দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক পদে আসীন ব্যক্তিকে নিয়ে চলছে সমালোচনা।দলের দুর্দিনে নেতৃত্ব দেওয়ায় নানান হামলা-মামলা, জুলুম-নির্যাতনের মুখেও যিনি সাহসিকতার সঙ্গে আন্দোলন সংগ্রামে সফল ভাবে অংশ নিয়ে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছেন,সেই ত্যাগী ও কারাবরণকারী নেতা নুর মোর্শেদকে বঞ্চিত করে বিতর্কিত ও নানা অপকর্মে জড়িত ব্যক্তি মোঃ আমান উল্লাহ আমানকে বাড্ডা থানা শ্রমিক দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নিয়োগ দেওয়ায় দলের তৃণমূল পর্যায়ে তীব্র প্রতিবাদী প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।


স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ-মোঃ আমান উল্লাহ আমান একসময় দলীয় রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকলেও সম্প্রতি সুবিধাবাদী ঘরানার একটি চক্রের সমর্থনে পুনরায় সক্রিয় হয়ে দলীয় কর্মী সেজেছে।তার বিরুদ্ধে জুয়ার আসর পরিচালনাসহ মাদক সংশ্লিষ্টতার অসংখ্য গুঞ্জন রয়েছে।বিগত স্বৈরাচার আমলে সরকারদলীয় কিছু প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের অভিযোগ রয়েছে।এমন একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিয়ে দলীয় নীতিনির্ধারকেরা ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মীদের অবমূল্যায়ন করেছেন বলে মনে করেন তৃণমূল নেতা কর্মীরা।
শ্রমিক নেতা নুর মোর্শেদ বলেন,শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দলের সকল কর্মকান্ডে সিনিয়র নেতাদের নির্দেশে ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে নেমে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি।দুঃসময়ে দলের জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছি।বিএনপির কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকায় ১১ টি মামলা ২৭ মাস জেল খেটেছি।কি কারণে আমার রাজনৈতিক অভিভাবকরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমার জানা নেই। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয় জানা মতে এমন কোন রকম কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়াইনি। যদি এমন কোন অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে দেখাতে পারে তাহলে স্ব-ইচ্ছায় অব্যাহতি নিবো।যদি না থাকে তাহলে তারা বিবেচনা করবেন বলে আমার বিশ্বাস।কেননা ত্যাগী নির্যাতিত কর্মীরা জায়গা পাবে সে আত্মবিশ্বাস আমার রয়েছে।কোন ষড়যন্ত্র সত্য দাবি রাখতে পারবে না।
বাড্ডা থানা শ্রমিক দলের সাবেক আহ্বায়ক ও বাড্ডা থানার বর্তমান সিনিয়র সদস্য আব্দুর রহমান টিটু বলেন,বর্তমান মহানগর নেতা কাজী শাহআলম রাজা ও সদস্য সচিব কামরুল জামান যে ভাবে কমিটি দিচ্ছেন তা ত্যাগীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে।তারা কি কারণে একজনকে অব্যাহতি দিচ্ছেন আবার কেন তাদের পুনর্বহাল করছে আমার জানা নেই। তবে এটা বলা যায় তাদের এমন কর্মকাণ্ড কমিটি বাণিজ্যের নমুনায় পরিণত হচ্ছে। বাড্ডা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক নুর মোর্শেদ একজন নিবেদিত কর্মী।তাকে বাদ দিয়ে কেন অন্য একজনকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আমার বোধগম্য নয়। তবে তাদের বলবো নিজেদের সাময়িক সুবিধার জন্য ত্যাগীদের বঞ্চিত করবেন না একদিন সব প্রকাশ পাবে
ঢাকা মহানগর উত্তর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক কাজী শাহ আলম রাজাকে একাধিক বার তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
স্থানীয় কর্মী সমর্থকদের মতে,এ ধরনের সিদ্ধান্তে সংগঠনের প্রতি নিবেদিত সংগ্রামী কর্মীদের মাঝে হতাশা বাড়বে এবং ভবিষ্যতে সাংগঠনিক ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়বে। ত্যাগ ও শ্রমের বদলে সুবিধাবাদ এবং বিতর্কিত কর্মকাণ্ডই যদি দলের পদপ্রাপ্তির মাপকাঠি হয়,তবে রাজনীতির আদর্শিক ভিত্তি চূড়ান্তভাবে বিপন্ন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তৃণমূল নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে- দ্রুত এই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত পুনঃর্বিবেচনা করে প্রকৃত ত্যাগীদের মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে হবে, নচেৎ মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের আস্থা সংকটে পড়বে যা আন্দোলন-সংগ্রামে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে


দৈনিক পুনরুত্থান /
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আপনার মতামত লিখুন: