• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২

Advertise your products here

  1. জাতীয়

শেরপুরে শুরু হলো দু’দিনব্যাপী ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসব


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০৭:০৩ পিএম
শেরপুরে শুরু হলো দু’দিনব্যাপী ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসব

শেরপুর জেলার  নালিতাবাড়ী উপজেলার  বারোমারী ধর্মপল্লীতে আজ থেকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের দু’দিনব্যাপী ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসব।

বৃহস্পতিবার ৩০ অক্টোবর বিকালে পবিত্র খ্রিস্টযাগের (উদ্বোধনী প্রার্থনা) মধ্য দিয়ে শুরু হবে তীর্থোৎবের আনুষ্ঠানিকতা। রাত আটটার দিকে তীর্থযাত্রার অন্যতম আকর্ষণ আলোক শোভাযাত্রা শুরু হবে।

 শত শত তীর্থযাত্রী মোমবাতি জ্বালিয়ে ঈশ্বর ও মা মারিয়ার নাম জপ করতে করতে উঁচু-নিচু পাহাড়ি টিলার আড়াই কিলোমিটার পথ পরিভ্রমণ করবেন। পরে মা মারিয়ার ৪২ ফুট উচ্চতার মূর্তির সামনে স্থাপিত প্যান্ডেলে রাতভর চলবে পাপ স্বীকার, নিরাময় অনুষ্ঠান, সাক্রামেন্তের আরাধনা, নিশিজাগরণ ও প্রার্থনা।

পরদিন শুক্রবার ৩১ অক্টোবর সকালে ক্রুশের পথ পরিভ্রমণ ও মহাখ্রিস্টজাগের (সমাপনী প্রার্থনা) মধ্য দিয়ে দুপুরে শেষ হবে দু’দিনব্যাপী এ তীর্থোৎসব। এবারের তীর্থোৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পোপের প্রতিনিধি বাংলাদেশে ভ্যাটিকান রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ জর্জ কোচেরি। তীর্থ আনুষ্ঠানিকতার পৌরহিত্য করবেন ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের বিশপ পনেন পৌল কুবি।

আয়োজক কমিটির প্রধান রেভারেন্ড ফাদার তপন বনোয়ারি জানান, যুগে যুগে পথভ্রষ্ট সন্তানদের সুপথের সন্ধান দিতে নানা রূপে ঈশ্বর জননী মা মারিয়ার আবির্ভাব ঘটে। ১৯১৭ সালে পর্তুগালের ফাতেমা নগরে তেমনি এক মেষ বালিকার রূপে মা মারিয়ার আবির্ভাবের পর থেকেই ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসবেব প্রচলন শুরু হয়েছে।

ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের আওতাধীন শেরপুরে নালিতাবাড়ীর বারোমরি ধর্মপল্লীতে ১৯৯৮ সালে ফাতেমা রানীর তীর্থস্থান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। 

পর্তুগালের ফাতেমা নগরীর আদলে ৪২ একর জমি জুড়ে স্থাপন করা হয় ফাতেমা রানীর এ তীর্থ স্থান। সেই থেকে প্রতি বছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার একটি মূল সুরের ওপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে দু’দিনব্যাপী ‘ফাতেমা রানীর তীর্থ উৎসব’।

এবারের মূল সূর হলো ‘আশার তীর্থযাত্রী ফাতেমা রানী মা মারিয়া বারোমারী’। এবারের বারোমারী ফাতেমা রানী মা মারিয়ার তীর্থোৎসব ২৫ বছরের জুবিলী উৎসব হিসেবে পালন হওয়ায় এর গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এবারের তীর্থযাত্রায় দেশ-বিদেশের প্রায় ৩০-৪০ হাজার তীর্থযাত্রী অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এটি মুলত রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও সকল খ্রিষ্টভক্তরা ধর্মীয় বিশ্বাসে এখানে অংশগ্রহন করেন। যা ইতোমধ্যে রোমান ক্যাথলিকদের জন্য এটি দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ তীর্থ উৎসব সমাবেশ বলে খ্যাতি পেয়েছে। তীর্থৎসবকে ঘিরে ইতোমধ্যে বারোমারী ধর্মপল্লীতে তীর্থস্থানের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, চুনকাম, অলংকরণ, প্যান্ডেল, ছামিয়ানা-গেট নির্মাণ, পূণ্যার্থী ও অতিথিদের আবাসন ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিং এলাকাসহ বিভিন্ন বিষয়ের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। 

গঠন করা হয়েছে বিভিন্ন উপকমিটি ও স্বেচ্ছাসেবক দল। চলছে নানা আয়োজনের মহড়া। সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসন, পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, রাজনীতিক এবং সুধীজনদের নিয়ে সভা করা হয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হয়েছে সিসি টিভি ক্যামেরা।

 

দৈনিক পুনরুত্থান /

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন