• ঢাকা
  • শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২

Advertise your products here

  1. জাতীয়

অবহেলা অযত্নে হারিয়ে যাচ্ছে ভবানীপুর জমিদার বাড়ি


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০৯:৪৩ পিএম
অবহেলা অযত্নে হারিয়ে যাচ্ছে ভবানীপুর জমিদার বাড়ি

অবহেলা অযত্নে হারিয়ে যাচ্ছে আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে অবস্থিত ভবানীপুর জমিদার বাড়ি। একসময় এর আভিজাত্য ও জাঁকজমক ছিল দৃষ্টিনন্দন, কিন্তু আজ তা প্রায় ভগ্নপ্রায় অবস্থায় ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

জেলা সদর থেকে প্রায় ২৪ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং আত্রাই উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে জমিদার বাড়িটি অবস্থিত। আত্রাই ও ছোট যমুনা নদীর তীরে ভবানীপুর বাজার সংলগ্ন স্থানে দাঁড়িয়ে থাকা এই রাজবাড়িটি আজো ইতিহাসপ্রেমীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

এই জমিদার পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জমিদার গির্জাশঙ্কর চৌধুরী। তার মৃত্যুর পর একমাত্র পুত্র প্রিয়শঙ্কর চৌধুরী জমিদারির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রিয়শঙ্করের আমলেই জমিদারির ব্যাপক বিস্তার ঘটে এবং বাড়ির স্থাপত্য আরও সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়। প্রজাদের উন্নয়নে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট ও পুকুর খননসহ বহু কল্যাণমূলক উদ্যোগ নেন।

দেশভাগের পর জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে প্রিয়শঙ্কর কলকাতা চলে যান। তবে তার চতুর্থ পুত্র প্রতাপশঙ্কর চৌধুরী ভবানীপুরেই থেকে যান এবং শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হন। ২০০৫ সালে তার মৃত্যুর পর বর্তমানে তার ছেলে অভিজিৎ চৌধুরী পরিবার নিয়ে জমিদার বাড়ির একটি অংশে বসবাস করছেন।

ভবানীপুর জমিদার বাড়ি রোমান স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত দ্বিতীয় তলার একটি সুবিশাল প্রাসাদ। এর সাথে যুক্ত ছিলো তিনটি নিজস্ব মন্দির: দুর্গা মন্দির, গোপীনাথ মন্দির ও বাসন্তি মন্দির।

শান বাঁধানো কুয়া ও পুকুর যার ঘাটে প্রতিদিন নানা পূজা-পার্বণ অনুষ্ঠিত হতো।

অতীতের সেই গৌরব আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

প্রাসাদের দেয়ালের পলেস্তারা উঠে গেছে, ছাদ ও দেয়াল ভেঙে পড়েছে।

জমিদার পরিবারের মূল্যবান দরজা, জানালা, শাল কাঠ এমনকি ইটও লুট হয়ে গেছে।

প্রাচীন গ্রন্থভাণ্ডার, নাটমন্দির ও নাট্যশালা ধ্বংসের পথে।

তবুও স্থানীয় মানুষ ও ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এই জমিদার বাড়ি আজো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বাড়ির একটি অংশে প্রতাপশঙ্করের স্ত্রী চিত্রা চৌধুরী ও তার সন্তানরা বসবাস করছেন।

ভবানীপুর জমিদার বাড়ি শুধু একটি স্থাপনা নয় এটি আমাদের ঐতিহ্য ও ইতিহাসের জীবন্ত সাক্ষ্য। অথচ যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে প্রাসাদটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব বিবেচনায় সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে ভবনটির সংরক্ষণ এখন সময়ের দাবি।

দৈনিক পুনরুত্থান /

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন