আশার আলো দেখছেন যানজটের নওগাঁ শহরে চার লেন সড়কের

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা শহর নওগাঁ। প্রতিদিন সকাল শুরু হয় শহরবাসীর যাটজটের মধ্য দিয়ে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তীব্র যানজটে নাকাল শহরবাসী ও পথচারীরা। আয়তনের দিক দিয়ে এ জেলা রাজশাহী বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড়। জেলায় ৩টি পৌরসভা রয়েছে।


নওগাঁ শহরের মোট আয়তন ৩৮ দশমিক ৪২ বর্গকিলোমিটার। ২০১০ সাল থেকে শহরে চলাচলের জন্য ব্যাটরিচালিত অটোরিকশার লাইসেন্স দেওয়া শুরু করে। বর্তমানে সব মিলিয়ে শহরের মধ্যে শুধু ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলছে প্রায় ১৫ হাজার।
শহরবাসীর অভিযোগ, অব্যবস্থাপনার কারণে শহরের যানজট এখন নিত্যসঙ্গী। প্রতিদিনই বড় হচ্ছে অটোরিকশার লাইন। এতে পথচারীরা পড়ছে মহাবিপদে। ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
তবে পৌর কর্তৃপক্ষ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, শহরের যানজট নিরসনে চার লেন রাস্তা তৈরির প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তারা। তাই অচিরেই যানজট থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।
সূত্র মতে জানাযায়, নওগাঁ শহরের ঢাকা বাসস্ট্যান্ড, তাজের মোড়, ব্রিজের মোড়, কেডির মোড়, বাটার মোড়, সরিষাহাটির মোড়, মুক্তির মোড়, কাজীর মোড়, রুবির মোড়, দয়ালের মোড় হয়ে বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটারে সব সময় যানজট লেগেই থাকে।
তবে শহরের ব্যস্ততম ঢাকা বাসস্ট্যান্ড, তাজের মোড়, ব্রিজের মোড়, বাটার মোড়, সরিষাহাটির মোড়, মুক্তির মোড়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ত জনমানুষ। সড়কজুড়ে অটোরিকশার রাজত্ব। এছাড়া বেশ কিছু স্থানে ফুটপাত দখল করে দোকানিরা দোকান করায় যানজট হয় দ্বিগুণ। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ পথচারী ও যাত্রীদের।


শহরের ব্রিজ মোড় এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুস ছালাম বলেন, শহরের আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা বেড়েছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। ফলে শহরে বেড়েছে যানজট।
নওগাঁ শহরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক করিম ও সোবহান আলী বলেন, শহরে অটোরিকশা রাখার মতো জায়গা নেই। তাই রাস্তার পাশে পার্কিং করতে হয়। বেকারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় অনেক শিক্ষিত ছেলেরাও এই ব্যাটরিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। উপায় না পেয়ে অটোরিকশা চালাচ্ছি।
নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নূরে আলম সিদ্দিক বলেন, শহরের প্রধান সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রস্তাবিত প্রকল্পের স্টেক হোল্ডার সভা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সেখানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হক স্যার উপস্থিত ছিলেন। প্রকল্পের আওতায় সান্তাহার ঢাকা রোড থেকে চৌমাসিয়া পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৫০ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ হবে। প্রকল্পে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১২০০ কোটি টাকা।
তিনি জানান, এই মেগা প্রকল্পে থাকবে ৭ ফুটওভার ব্রিজ, ২০টি মিনি বাসস্টপ, ১৩টি কালভার্ট, ৪টি ব্রিজ, সড়ক বাতি, ফুটপাত ও উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ আধুনিক সব সড়ক কাঠামো ব্যবস্থা। আশা করছি প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে শহরের যানজটের ভোগান্তি লাঘব হবে।


নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, শহরের বেশকিছু রাস্তা বেহাল হলেও নতুন করে তিনটি রাস্তার সংস্কার কাজের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হবে।
এছাড়া শহরের যানজট থেকে মুক্তি লাভের জন্য নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার লাইসেন্সও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সবার চেষ্টায় দ্রুত শহরবাসী যানজট থেকে মুক্তি পাবে।
দৈনিক পুনরুত্থান /
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আপনার মতামত লিখুন: