কয়রার গ্রামীণ জনপদে কলাগাছের গেট,এ যেন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ও আতিথেয়তার প্রতীক

উপকূলীয় উপজেলা খুলনার কয়রার গ্রামীণ জনপদে বিয়ে - শাদী, হালখাতা সহ নানা সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এখনো দেখা মেলে পরিবেশবান্ধব কলাগাছের গেট। এটি শুধু একটি প্রবেশপথ নয়, বরং বাঙালি সংস্কৃতির ও সৌন্দর্য্যর প্রতীক।


রবিবার (১৪সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৪নং কয়রা লঞ্চঘাট সংলগ্ন বাজর ধরে হেঁটে যেতেই চোখে পড়ে একটি কাপড়ের দোকানে বাকী টাকা আদায়ের (হালখাতা) অনুষ্ঠানের এমন কলাগাছে ঘেরা গেট। দোকানের একপাশে টানানো মাইকে চলছে হালখাতার প্রচার। অন্যপাশে আরেকজন ক্যাশ টেবিল নিয়ে খরিদ্দারদের কাছ থেকে বুছে নিচ্ছে টাকা। সবাই বেশ হাসি খুশিতে পার করছে সময়।
স্থানীয়রা বলছেন গ্রামের মানুষ কলাগাছ, গোলপাতা সহ নানা উপকরণ ব্যবহার করে গেট তৈরি করে অতিথিদের বরণ করে নেন। এতে যেমন পরিবেশবান্ধব উপকরণের ব্যবহার হয়, তেমনি অতিথির প্রতি সম্মান ও আন্তরিকতার প্রকাশ ঘটে।
ব্যাসায়ী আসাদুজ্জামান বলেন, ডিজিটাল যুগে সবাই প্যানা ফেস্টুন সহ নানা আসবাবপত্র দিয়ে গেট সাজায়। কিন্তুু আমার মনে হয়েছে গ্রাম বাংলার প্রান প্রকৃতি ফুটিয়ে তুলতে পরিবেশবান্ধব এই কলা গাছের গেট যে মনে করিয়ে দেয় সেই শৈসবের কথা। এটা একদিকে যেমন খরচ কম অন্যদিকে পরিবেশবান্ধবও। গতবছর দোকানের বাকী টাকা আদায়ে (হালখাতা)অনুষ্ঠানে বাড়ি থেকে আনা কলাগাছের গেট করেছিলাম পরবর্তীতে সেই গাছ নষ্ট না করে পরিচর্যা করে এবছরও একই গাছ দিয়ে গেট সাঁজিয়েছি। এক বছরের ব্যবধানে গাছে কলাও হয়েছে।
পার্শবর্তী ফাস্টফুড ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান সবুজ বলেন, কলাগাছের গেট না থাকলে অনুষ্ঠান যেন অপূর্ণ লাগে। সময়ের পরিবর্তনে শহরে এই ঐতিহ্য বিলুপ্তির পথে থাকলেও গ্রামে এখনো তা জীবন্ত রয়েছে। আমরা সেই গ্রামীন প্রকৃতিকে ধরে রাখার চেষ্টা করছি।
কয়রা কপোতাক্ষ কলেজের অবসারপ্রাপ্ত অধ্যাপক আ,ব,ম আব্দুল মালেক গ্রামীন এই ঐতিহ্য ধরে রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এমন পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ আমাদের শেকড়ের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও গভীর করে।


সংযুক্তি ছবি: খুলনার কয়রা উপজেলার একটি দোকানে বাকী টাকা আদায়ের (হালখাতা) অনুষ্ঠানের কলা গাছ দিয়ে ঘেরা গেট।
দৈনিক পুনরুত্থান / ফরহাদ হোসেন,কয়রা(খুলনা)প্রতিনিধি
- বিষয়:
- কলাগাছের গেট
- গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আপনার মতামত লিখুন: