• ঢাকা
  • বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

Advertise your products here

  1. জাতীয়

মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ব্যঙ্গ কার্টুনের অভিযোগ, বিক্ষোভে উত্তাল ইস্তাম্বুল


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ০১ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০:১২ পিএম
মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ব্যঙ্গ কার্টুনের অভিযোগ, বিক্ষোভে উত্তাল ইস্তাম্বুল

হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গ কার্টুন প্রকাশের অভিযোগ ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে। সোমবার প্রকাশিত ‘লে মান’ নামের ব্যঙ্গাত্মক পত্রিকার বিরুদ্ধে ‘ধর্মীয় মূল্যবোধে অপমানজনক’ কার্র্টুন প্রকাশের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এই অভিযোগে পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেন ইস্তাম্বুলের প্রধান কৌঁসুলি। 

ইতিমধ্যে পত্রিকাটির ৪ কার্টুনিস্টকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনাকে জঘন্য উসকানি বলে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিরস্কার করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। এএফপি। 

আগেরদিন সোমবারই ‘লে মান’ পত্রিকার সাংবাদিকরা নিয়মিত যাতায়াত করেন এমন একটি বারে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সংঘর্ষে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ জন ছিল। ‘লে মান’ পত্রিকা অফিসের সামনেও জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের কঠোর ব্যারিকেডের কারণে পিছু হটে। ইস্তাম্বুলের তাকসিম মসজিদের সামনে  মঙ্গলবারও বিক্ষোভ করেন শত শত মানুষ। 

পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক তুনচাই আকগুন দাবি করেছেন, ওই কার্টুন কোনোভাবেই নবী মুহাম্মদের চিত্র নয়। তিনি জানান, কার্টুনটি মূলত ফিলিস্তিনি এক মুসলমান শিশুর কল্পিত নাম ‘মুহাম্মদ’ ব্যবহার করে তৈরি করা চিত্র। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীজুড়ে ২০ কোটিরও বেশি মানুষের নাম মুহাম্মদ। এর সঙ্গে ধর্মীয় অবমাননার কোনো সম্পর্ক নেই।’ 

মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত লে মান পত্রিকাটি রাজনৈতিক ব্যঙ্গচিত্রের জন্য সুপরিচিত। বিশেষ করে, ২০১৫ সালে ফরাসি পত্রিকা শার্লি হেবদোর পক্ষে অবস্থান নেওয়ার পর থেকেই এটি রক্ষণশীলদের চোখে সমালোচনার পাত্র।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি তুরস্কের একটি রাজনৈতিক স্যাটায়ার সাময়িকী লে মান-এ একটি কার্টুন বা ব্যঙ্গচিত্র ছাপা হয়। সেখানে দেখা যায়, একজন মুসলিম ব্যক্তি এবং একজন ইহুদি ব্যক্তি হাত মেলাচ্ছেন এবং তাদের পায়ের নিচ থেকে একের পর এক বোমা পড়ছে। তাদের উভয়ের পিঠে একজোড়া করে পাখা এবং মাথার ওপর দেবদূতসুলভ আলোকচক্র আছে। ছবিটিতে মুসলিম ব্যক্তির নাম দেওয়া হয়েছে- ‘মুহাম্মদ’। লে মানের সর্বশেষ সংখ্যাটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কার্টুনটি ভাইরাল হয় এবং ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে যে হজরত মুহাম্মদ (স.) এবং হজরত মুসা (আ.)-কে ব্যঙ্গ করে কার্টুনটি আঁকা হয়েছে। তবে লে মান কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সোমবার তুরস্কের প্রধান পর্যটন সড়কে শত শত মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় তারা ‘আল্লাহ মহান’ স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি ইসলামি শরিয়া আইন অনুসারে এই লে মানের কর্তৃপক্ষ, সম্পাদক ও কার্টুনিস্টদের বিচারের দাবি জানান।  

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়েরলিকায়া সোমবার সংবাদিকদের বলেছেন, এই কার্টুনটি বাকস্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার চরম অপব্যবহার এবং যারা এটি অঙ্কন ও প্রকাশের সঙ্গে যুক্ত তাদের সবাইকে আইনের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। 

তুরস্কের প্রেসিডেন্টের প্রেস সেক্রেটারি ফাহরেত্তিন আলতুন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই কার্টুন আমাদের বিশ্বাস এবং মূল্যবোধের ওপর ঘৃণ্য আঘাত।’ 

তুরস্কের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে এ ইস্যুতে তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে লে মান সাময়িকীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, কার্টুনটিতে ইসলাম ধর্মের প্রবক্তা হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে ব্যঙ্গ করা হয়নি। বরং ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মুসলিমদের ওপর চলমান অত্যাচার নিয়ে মুসলিম বিশ্বের নীরবতাকে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। 

দৈনিক পুনরুত্থান /

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন