• ঢাকা
  • রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ ভাদ্র ১৪৩২

Advertise your products here

  1. জাতীয়

রাজশাহীতে গবাদিপশুর খাদ্যর তীব্র সংকটে খামারিরা বিপাকে


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০৬:০৫ পিএম
রাজশাহীতে গবাদিপশুর খাদ্যর তীব্র সংকটে খামারিরা বিপাকে

রাজশাহীতে গবাদিপশুর খাদ্যর (খড়) নিয়ে তীব্র সংকটে খড়ের দাম বেড়ে হওয়ায় খামারিরা বিপাকে তবে এখন খামারিরা নির্ভর করছেন কচুরিপানার (দলের) ওপর। খামারিরা জানান, বর্তমান সময় খড়ের কেজি ও আঁটির দাম কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় খামারিদের পক্ষে তা কেনা কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে গরুর জন্য সহজলভ্য খাবার হিসেবে কচুরিপানা (দল) কেটে ঘরে নিয়ে যাচ্ছেন তারা।

রাজশাহী অঞ্চলের বিভিন্ন উপজেলার গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে, মাঠ ও পুকুর-ডোবা থেকে কচুরিপানা (দল) সংগ্রহ করছেন গরু চাষিরা। কেউ বাঁশ বা লাঠির সাহায্যে পানির ভেতর থেকে টেনে তুলছেন, আবার কেউ নৌকা ব্যবহার করছেন। কৃষকদের মতে, কচুরিপানা (দল) গরুর জন্য খুব একটা পুষ্টিকর খাবার নয়, তবে খড়ের চড়া দামের কারণে বিকল্প হিসেবে এটিই একমাত্র ভরসা।

মোহনপুর উপজেলার পশু চাষী আব্দুল হালিম,সোহরাপ ও হান্নান বলেন, গরুর প্রধান খাবার খড় কিন্ত্ত এখন ১২ হাজার টাকা কাউন খড়ের দাম। এতো দামে আমাদের পক্ষে খড় কেনা সম্ভব নয়। তাই কচুরিপানাই (দল) আমাদের ভরসা।”

ছোট খামারিরা জানান, খড়ের সংকট অব্যাহত থাকলে গরু মোটাতাজাকরণ ও কৃষি কাজের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তারা সরকারের কাছে খড়ের দাম নিয়ন্ত্রণ এবং বিকল্প পশুখাদ্য সহজলভ্য করার দাবি জানিয়েছেন।

, এ বছর বন্যায় আউশ ধান, জমিতে রোপণ করা আমন ধানের চারা ও গো-খাদ্য ঘাস নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি, টি-আমণ ধান কিছুটা আধা পাকা অবস্থায় হারভেষ্টার মেশিন দিয়ে কাটা মাড়াই করায় গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দেয়। কিছু কিছু এলাকায় খড় পাওয়া গেলেও প্রান্তিক গবাদিপশু পালনকারীদের হাতের নাগালে নেই দাম।

বাজারে বিক্রি করা গো-খাদ্যের দামও আকাশচুম্বী। যার ফলে প্রান্তিক গবাদিপশু পালনকারী গৃহস্থরা পড়েছেন চরম বিপাকে। গবাদিপশু (গরু) বাঁচিয়ে রাখতে তারা বাড়ির পাশের খাল, বিল ডোবায় জন্মানো কচুরিপানা দল তুলছেন। গো-খাদ্য হিসেবে কচুরিপানাই এখন তাদের শেষ ভরসা। কেউ কেউ নিজেদের বাড়ির কাছাকাছি কচুরিপানা না পেয়ে রিকশাভ্যান ভাড়া করে কেউবা পায়ে হেঁটেই দূর-দূরান্ত থেকে সংগ্রহ করছেন কচুরিপানা। অনেক খামারিও গো-খাদ্য সংকটের কারণে শ্রমিক দিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে কচুরিপানা(দল)সংগ্রহ করছেন।

গ্রামীণ জনপদে কচুরিপানার এ ব্যবহার নতুন কিছু নয়, তবে এবার খড়ের অস্বাভাবিক দামের কারণে তা গরুর প্রধান খাবারে পরিণত হয়েছে।

কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কর্মকর্তা আকবর হোসেন বলেন, কচুরিপানা (দল) একধরনের বহুবর্ষজীবী ভাসমান উদ্ভিদ। উদ্ভিদটি গো-খাদ্যের চাহিদা মেটানোসহ নানাবিধ কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে কৃষিতাত্ত্বিকভাবে বিবেচনা করলে এটি একটি আগাছা। কচুরিপানা খুব দ্রুত বংশবিস্তার করে। এজন্য নিচু ফসলি জমিতে বিশেষ করে ধানের জমিতে এই উদ্ভিদকে আগাছা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গো-খাদ্য হিসেবে কচুরিপানা ব্যবহৃত হচ্ছে। এর ফলে এক দিকে যেমন নিচু ফসলি জমিতে কচুরিপানা নিয়ন্ত্রণে থাকবে অন্যদিকে গো-খাদ্যের চাহিদাও মিটবে। তানোর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. ওয়াজেদ আলী বলেন, শুধু কচুরিপানার ওপর নির্ভর করে গবাদিপশু লালন পালন করা অত্যন্ত কষ্টের। তবে এ মৌসুমে খাল-বিলে প্রচুর কচুরিপানা পাওয়া যাচ্ছে। এতে গবাদিপশু পালনকারীদের জন্য উপকার হয়েছে। তবে কচুরিপানা গরু বা মহিষকে খাওয়ানোর পূর্বে রোদে শুকিয়ে খড়ের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ানো ভালো।

 

দৈনিক পুনরুত্থান /

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন