আইনজীবীদের নিয়ে কটূক্তি: সাবেক এমপি’র বিরুদ্ধে মামলা
সাবেক এমপি ফরহাদের বিরুদ্ধে ঢাকায় ২ মামলা আদালত প্রতিবেদক আইনজীবীদের নিয়ে কটূক্তি করায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বরিশালের সাবেক এমপি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদের বিরুদ্ধে ঢাকার পৃথক দুই আদালতে মানহানির মামলা করা হয়েছে। রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সমাজকল্যাণ সম্পাদক এডভোকেট মাহবুব হাসান (রানা)।
শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি আমলে গ্রহণ করে আসামিকে হাজিরের জন্য সমন ইস্যু করেন। এছাড়া ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এডভোকেট এ,টি,এম আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে অপর মামলাটি করেন। শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভিক্টরি চাকমা মামলাটি আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে সমন ইস্যু করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ জন্মের শুরু হইতেই এদেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসে আইনজীবীরা প্রধান ভূমিকা রাখিয়া আসিতেছেন। যে কোন রাজনৈতিক ক্রান্তিকালে আইনজীবী সমাজ জনগণের সহিত একাত্ত থাকিয়া তাহা মোকাবিলা করিয়াছেন। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদেও সবসময় আইনজীবীদের উল্লেখযোগ্য আসন ছিলো। বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদেও স্বনামধন্য আইনজীবী তাহাদের সুচিন্তিত কর্মের মাধ্যমে দেশ পরিচালনায় সম্পৃক্ত রহিয়াছেন।তাছাড়া এদেশের আইনজীবীরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সবসময়ই অগ্রণী ভূমিকা পালন করিয়াছেন।
ইহাছাড়া আইনজীবীরা আইনপেশার মত মহান ও মানবসেবাধর্মী পেশায় সম্পৃক্ত থাকিয়া দেশ ও জনগণকে নিরলসভাবে সেবা প্রদান করিয়া আসিতেছেন। আরজিতে আরও বলা হয়, আসামী আইনজীবীদের এহেন অর্জন ভূলুণ্ঠিত করিবার নিমিত্তে এবং আইনজীবীদের হেয় প্রতিপন্ন করিবার নিমিত্তে বিগত ৫ নভেম্বর অনুমান বিকাল ৪.০০ ঘটিকার সময় বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার কেদারপুর ইউনিয়নের এক জনসমাবেশে বাংলাদেশে আইনপেশায় নিয়োজিত আইনজীবীদের নিয় কুটুক্তি করিয়া বলেন, 'ওকালতি যারা করে, তারা কিন্তু টাউট-বাটপার হয়।" আসামীর এহেন কুটুক্তি বাংলাদেশের আইনজীবী সমাজের জন্য মানহানিকর। বিবাদীর এহেন উক্তি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
আইনজীবীদের দেশ ও জনগণের নিকট হেয় প্রতিপন্ন করিবার মানসে বিবাদী ইচ্ছাকৃতভাবে উক্তরুপ কুটুক্তি করিয়াছেন। বিবাদী একজন সাবেক আইনপ্রণেতা অর্থাৎ সাংসদ হইয়াও এহেন উক্তি করিয়াছেন। যাহা অত্র বাদী ঢাকা আইনজীবী সমিতির সমাজ কল্যাণ সম্পাদকের রুম অর্থাৎ বসিয়া বিভিন্ন পত্রিকা মাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিতে পারেন। আসামীর এহেন কুটুক্তি ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যে চরমভাবে অপমানিত হন। বাদী মানসিকভাবে চরম আহত হন। আসামীর এহেন বক্তব্যে আইনজীবী সমাজের সুনাম চরমভাবে ভূলুণ্ঠিত হয়। আসামীর বক্তব্যে বাদী তাহার পেশাগত জীবনে চরমভাবে অপমানিত হন।
তাহার মোয়াক্কেলসহ বিভিন্ন লোকজনের কাছে তাহার মানহানি ঘটে। যাহার পরিমান আর্থিক মানদন্ডে ১০০ কোটি টাকার অধিক। উল্লেখ্য আসামীর এহেন বক্তব্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল সহ বিভিন্ন বার সমূহ প্রতিবাদ লিপি ও নিন্দা জ্ঞাপন করেন। একজন স্বনামধন্য আইনজীবী হিসাবে বাদী মনে করেন উল্লেখিত আসামীর এহেন কুটুক্তির আইনসম্মত বিচার না হইলে আইনজীবীদের অবস্থান দেশবাসীর কাছে চরমভাবে ভুলুণ্ঠিত হইবে।
আর বাদী নিজেও নিজের কাছে ছোট হইয়া থাকিবেন। বিধায় বাদী উক্ত আসামীর বিরুদ্ধে বাদীসহ সমগ্র আইনজীবী সমাজের মানহানি করিবার অপরাধে অত্র মামলা আনয়ন করিয়াছেন। বাদী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
দৈনিক পুনরুত্থান /
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
আপনার মতামত লিখুন: