• ঢাকা
  • সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২

Advertise your products here

  1. জাতীয়

ঘুষ না দেওয়ায় ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিলের অভিযোগ এসআই কামালের বিরুদ্ধে


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০১:১১ পিএম
ঘুষ না দেওয়ায় ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিলের অভিযোগ এসআই কামালের বিরুদ্ধে

কক্সবাজারের রামুতে হত্যার উদ্দেশ্যে চাচাতো ভাই ও ভাতিজাকে কুপিয়ে গুরুতর জখমের ঘটনায় মামলা দায়েরের সাড়ে ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও প্রধান আসামী খোকন বড়ুয়া এখনো গ্রেপ্তার হননি। তবে অভিযোগ উঠেছে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামীর কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ নেওয়ার বিনিময়ে তদন্ত কর্মকর্তা রামু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. কামাল হোসেন ভিকটিমদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছেন।

শনিবার (১১ অক্টোবর) ভুক্তভোগী জিটু বড়ুয়া কক্সবাজার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি জানান, গত ২৪ জুন খোকন বড়ুয়ার নেতৃত্বে সন্ত্রাসী ভাড়াটে তাকে ও তার বাবাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।

ঘটনার ২ দিন পর রামু থানায় খোকন বড়ুয়াসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে বাকি দুই আসামী জামিনে মুক্তি পান, প্রধান আসামী খোকন এখনো পলাতক।

ঘটনায় পর খোকন বড়ুয়া হামলার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে ৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজীর অভিযোগ এনে তাদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এই দুই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হন রামু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. কামাল হোসেন।

জিটু বড়ুয়া অভিযোগ করেন, চাঁদাবাজী মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এসআই কামাল হোসেন তার কাছে ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ না দেওয়ায় তিনি তৎক্ষণাৎ মিথ্যা প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। এতে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে তিনি জানান।

জিটু বড়ুয়ার বাবা শিবু বড়ুয়া অভিযোগ করেন, খোকন বড়ুয়া তাদের দায়েরকৃত মামলার পরোয়ানাভুক্ত প্রধান আসামী হলেও তাকে আটক না করে উপ-পরিদর্শক কামাল হোসেন মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন।

এতে তারা অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

চাঁদাবাজীর এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে গত ১১ জুলাই রামু থানার সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে হাজারীকুল, সিপাহীরপাড়া ও নাথপাড়াবাসী। জিটু বড়ুয়ার প্রতিবেশীরা জানান, বাড়ি ভিটার জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে ঘটনার দিন খোকন বড়ুয়ার নেতৃত্বে হামলা হয়। ঘটনার আগে বা পরে কোনো চাঁদা দাবীর ঘটনা ঘটেনি; এটি সম্পূর্ণ সাজানো।

অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. কামাল হোসেন বলেন, তিনি খোকন বড়ুয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে ঘটনার স্ববিস্তারে জানেন।

কেন তাকে আটক করা হয়নি প্রশ্ন করলে তিনি জানান, জিআর মামলায় খোকন বড়ুয়ার বিরুদ্ধে পরোয়ানা থাকার বিষয়টি আগে জানতেন না। তবে ঘুষ দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে দুটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদনই আদালতে পাঠানো হয়েছে।

রামু থানার অফিসার ইনচার্জ আরিফ হোসাইন বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। রামু থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ফরিদ বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক; এসআই কামাল হোসেন এভাবে প্রতিবেদন না দিয়েও দিতে পারতেন।

কক্সবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন শাহীন বলেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে একই ঘটনার তদন্তভার থাকা সাবেক এসআই চিরঞ্জীব বড়ুয়ার বিরুদ্ধে বাদীর কাছ থেকে ঘুষ দাবি করার একটি অডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

দৈনিক পুনরুত্থান /

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন