• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

Advertise your products here

  1. জাতীয়

ঝিনাইদহে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:০২ পিএম
ঝিনাইদহে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০

ঝিনাইদহে সামাজিক কলহের সূত্র ধরে বিএনপির দুই পক্ষে মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সদর উপজেলার ফুরসন্দি ইউনিয়নে বিএনপির দুটি গ্রুপের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার ফুরসন্দি গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে গুরুতর দুজন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের যেসব নেতা ৫ আগস্টের আগে এলাকায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করত, তারাই এখন বিএনপির একটি পক্ষে যোগ দিয়ে সামাজিক বিরোধ ও সংঘর্ষে ইন্ধন দিচ্ছে। এমনকি, তারা সরাসরি সংঘর্ষে যুক্ত হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ফুরসন্দি গ্রামের শাহাবুর মোল্লার সমর্থক আল-আমিনের সঙ্গে বিএনপি নেতা জাহিদ বিশ্বাসের সমর্থক ফিরোজের পারিবারিক কলহ বাধে। পরে সেই পারিবারিক কলহ রাজনৈতিক গ্রুপিং সংঘর্ষে পরিণত হয়।

এ সময় উভয়পক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। এ সময় দুটি বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ফুরসন্দি গ্রামের প্রভাবশালী বিএনপি নেতা শাহাবুর মোল্লা ও জাহিদ বিশ্বাসের সমর্থকদের মাঝে বিরোধ চলছিল। শাহাবুর মোল্লার দলীয় পদ নেই, তবে তিনি বিএনপির প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। অপর গ্রুপের জাহিদ বিশ্বাস ফুরসন্দি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক। তবে ৫ আগস্টের পরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাদের নিজের গ্রুপে টেনে নেন শাহাবুর মোল্লা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, জুলাই বিপ্লব চলাকালে ৪ আগস্ট জেলা বিএনপির কার্যালয় ও বিএনপি সভাপতি এমএ মজিদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সেই মামলার আসামি ফুরসন্দি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ওহাব মোল্লা, আওয়ামী লীগ কর্মী ইমরোজ, মজিদ মোল্লা, আক্তার মোল্লা—এরা সবাই বিএনপি নেতা শাহাবুর মোল্লার সমর্থক। এ ছাড়া, ফুরসন্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউনুস মন্ডল, ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুরকে নিজের গ্রুপে টেনে নিয়েছেন বিএনপি নেতা শাহাবুর মোল্লা।

তারা আরও অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে দল ভারী করে গ্রামে গ্রামে গিয়ে এরা মারামারি ও সংঘর্ষ ঘটিয়ে বেড়াচ্ছেন। আওয়ামী লীগের লোকজন আগের মতোই মারামারি, সংঘর্ষ ও হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি নেতা শাহাবুরের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় এসব আওয়ামী লীগ নেতাদের দৌরাত্ম্য দিনদিন বেড়েই চলেছে।

ফুরসন্দি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক জাহিদ বিশ্বাস বলেন, শাহাবুর মোল্লার সঙ্গে আওয়ামী লীগের অনেকেই যোগ দিয়েছে। এরা সব ৫ আগস্টের পরের বিএনপি। বিএনপি করা তো দোষের না, একজন আওয়ামী লীগ থেকে বা অন্য দল থেকে এসে বিএনপি করতেই পারে। কিন্তু, বিএনপিতে এসে মারামারি সংঘর্ষ করার তো কোনো সুযোগ থাকা উচিত না। আওয়ামী লীগের লোকজন সব এখন ৫ আগস্টের পরের বিএনপি। তারাই এসব ঝামেলা করছে।

শাহাবুর মোল্লার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার সমর্থক, ফুরসন্দি ইউপি সদস্য ওহাব মোল্লা বলেন, আমি মেম্বারি করি। চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ করে। চেয়ারম্যান কাজে ডাকলে না যেয়ে তো উপায় থাকে না। আমার চেয়ে বড় বিএনপি ফুরসন্দিতে একটাও নেই।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন আলমকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ফুরসন্দি ইউনিয়নের হুদা গ্রামের পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সামাজিক বিরোধের সূত্রধরে রাজনৈতিক দুটি পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বলে আমরা প্রত্যক্ষদর্শীদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

দৈনিক পুনরুত্থান /

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন