• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

Advertise your products here

  1. জাতীয়

নান্দাইলে উপসহকারী প্রকৌশলীর ঘুস নেওয়ার ভিডিও ফাঁস


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০৯:১৭ পিএম
নান্দাইলে উপসহকারী প্রকৌশলীর ঘুস নেওয়ার ভিডিও ফাঁস

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা এলজিইডি অফিস যেন উপসহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত টোল প্লাজা। এখানে কাজ পেতে বা বিল তুলতে হলে ‘ট্যাক্স’ নামে ঘুম না দিলে কোনো ফাইল নড়েও না চড়েও না— এমন অভিযোগ শুধু আজকের নয়, বছরের পর বছর চলা এক নগ্ন সত্য।

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই উপজেলায় বসে শফিকুল গড়ে তুলেছেন দুর্নীতির রাজত্ব। প্রশাসন, দল, সরকার-কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা না করে প্রকাশ্যে ঘুস বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ঠিকাদারদের অভিযোগ— শফিকুলের সামনে ফাইল মানেই টাকা; টাকা ছাড়া তার টেবিল পর্যন্ত ফাইল উঠানোর সাহস কারও নেই।

গ্রামীণ সড়কের পিচ ঢালাই (কার্পেটিং) কাজের সুযোগ নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারদের জিম্মি করে আসছেন। কাজ শেষে বিল নিতে হবে— এই দুর্বলতাকেই অস্ত্র বানিয়ে প্রকৌশলী শফিকুল খোলামেলাভাবে চাঁদাবাজির মতো ঘুস আদায় করেন। ঠিকাদাররা বাধ্য— কারণ টাকা ছাড়া ফাইল ‘ফিটনেস’ পায় না, আবার টাকা দিলেই অবৈধ কাজও সেকেন্ডের মধ্যে বৈধ হয়ে যায়।

সম্প্রতি তার ঘুস নেওয়ার ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর জনমনে ক্ষোভ বিস্ফোরিত হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়— শফিকুল ফাইলের ভেতরে লুকানো টাকার বান্ডিল তুলে নিয়ে কোনো কথা না বলেই ড্রয়ারে ঢুকিয়ে দেন। কাজের মান, কাগজপত্র—কিছুই আর গুরুত্বপূর্ণ নয়, টাকা পেলেই সব ‘ওকে’। দুর্নীতির এমন প্রকাশ্য প্রদর্শনীতে নান্দাইলবাসী ক্ষুব্ধ, লজ্জিত ও বিস্মিত।

ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর পুরো নান্দাইলে এলজিইডির কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্নের ঝড় উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি— এ ধরনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা প্রশাসনের মুখে চপেটাঘাত। একজন কর্মকর্তার এত বছরের দৌরাত্ম্য প্রশাসনের নীরবতাকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

ভিডিও ফাঁসের বিষয়ে জানতে উপসহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামকে অফিসে গিয়ে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আব্দুল মালেক বিশ্বাস বলেন, আমি ভিডিওটি দেখেছি। তবে শফিকুর রহমান দাবি করেছেন তার ভিডিওটি তিন বছর আগের। তিন বছর আগে ঘুস নেওয়া যায়, এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন- এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে। 

নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা জান্নাত মুঠোফোনে বলেন- এ বিষয়ে উপসহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দৈনিক পুনরুত্থান /

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন