রাণীনগরে বস্তায় আদা চাষ প্রদর্শনীতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ
নওগাঁর রাণীনগরে বস্তায় আদা চাষ প্রদর্শনীতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। কেউ বলছেন,তালিকায় নাম থাকলেও প্রদর্শনী পাননি আবার কেউ বলছেন,বরাদ্দ অনুযায়ী প্রদর্শনীর উপকরণ পাননি আবার কেউ বলছেন কৃষি অফিস থেকে সরবরাহ করা আদা বীজের গাছই ওঠেনি। ফলে এমন অনিয়মের কারনে সরকারের উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে বসেছে।
রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিস সুত্র জানায়,সারাদেশে পতিত জমিতে অনাবাদি প্রকল্পের আওতায় ২২টি প্রদর্শনী হাতে নেয়া হয়। ২০২৪/২৫ অর্থ বছরে অনাবাদি প্রকল্প বাস্তবায়নে উপকরণ হিসেবে চলতি বচরের ২১মার্চ এক যোগে ২২জন কৃষককে প্রতি প্রদর্শনীর জন্য ৩০টি করে খালি বস্তা,আড়াই কেজি আদা বীজ,৬কেজি ডিএপি,৬কেজি পটাশ সার,১০কেজি জিপসাম,২৫কেজি জৈব সার এবং একটি করে সাইনবোর্ড দেয়া হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে এমন তথ্য জানালেও মাঠ পর্যায়ে এর চিত্র ভিন্ন। তথ্য মতে, দেশে আদার চাহিদা পুরণ করে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনতে বস্তায় আদা চাষের পদ্ধতি সর্ম্পকে কৃষকদের মাঝে তুলে ধরা,কম খরচে পতিত জমিতে অধিক লাভজনক আদা চাষ সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার লক্ষে অনাবাদি প্রকল্পের আওতায় বস্তায় আদা চাষ প্রদর্শনী হাতে নেয়া হয়। সরকার কৃষকদের সাবলম্বি এবং সহায়তা করতে এমন প্রকল্প হাতে নিলেও অসাধু কর্মকর্তাদের দূর্নীতির কারনে সুফল পাননা কৃষকরা।
কৃষি অফিস থেকে সরবরাহ করা ২২জন প্রদর্শনী কৃষকের নামের তালিকায় প্রথমে রয়েছেন উপজেলার একডালা ইউনিয়নের জলকৈ গ্রামের মৃত জসমত আলীর ছেলে মনজুর রহমানের নাম। অথচ মনজুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান,তার নামে যে প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে তা আপনাদের (সাংবাদিকদের) মাধ্যমে জানতে পারলাম। অফিস থেকে আমাকে এরকম কোন প্রদর্শনী দেয়া হয়নি বা বলাও হয়নি। এবিষয়ে আমার কিছু জানাও নেই। ওই প্রদর্শনীর দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা ব্লক সুপার ভাইজার আফাজ উদ্দীনের কাছে জানতে চাইলে তিনিও এর কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
একডালা গ্রামের কৃষক আকরাম হোসেন বলেন,অফিস থেকে যে আদা বীজ দেয়া হয়েছিল সেই বীজ থেকে গাছ ওঠেনি। ফলে নতুন করে বাজার থেকে আদা বীজ কিনে পুনরায় রোপন করেছেন।
গহেলাপুর মানিকহার গ্রামের কৃষক অঞ্জনা রাণী জানান,অফিস থেকে তাকে ৩০টি খালি বস্তা,দুই কেজি ডিএপি,দুই কেজি পটাশ সার,দুই কেজি আদা এবং আধা বস্তা জৈব সার ও একটি সাইনবোর্ড দেয়া হয়েছে। এর বাহিরে আর কিছু পাননি তিনি। একই কথা বলেছেন ওই গ্রামের কৃষক অনন্ত সরকার।
ভবানীপুর গ্রামের কৃষক জামিল হোসেন জানান, তাকে ৩০টি বস্তা,দুই কেজি আদা এবং ডিএপি,পটাশ সার ও জৈবসার মিলে মোট ২৫কেজি দেয়া হয়েছে।
রাণীনগর উপজেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন,সরকার কৃষকের সার্থ রক্ষায় নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন। কিন্তু অসাধু কর্মকর্তাদের দূর্নীতি-অনিয়মের কারনে কৃষকরা এর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই কৃষি অফিসের অনিয়ম-দূর্নীতির বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এব্যাপারে জানতে চাইলে রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাকিমা খাতুন অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,বরাদ্দ অনুযায়ী সবগুলো উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। তবে তালিকায় নাম থাকলেও প্রদর্শনী না পাওয়ার বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেননি তিনি।
দৈনিক পুনরুত্থান /
- বিষয়:
- রাণীনগর
- অনিয়মের অভিযোগ
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
আপনার মতামত লিখুন: