• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

Advertise your products here

  1. জাতীয়

আসামি ধরতে গিয়ে হামলার শিকার সিআইডি কর্মকর্তা, ৭ ঘণ্টার পর ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০৭:৩৫ পিএম
আসামি ধরতে গিয়ে হামলার শিকার সিআইডি কর্মকর্তা, ৭ ঘণ্টার পর ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

সিলেটে একটি সাইবার মামলায় পরোয়ানাভুক্ত পালাতক আসামি রহিম উদ্দিন রাজু (৩৩) নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) এক কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। ছুরিকাঘাত করে আসামি পালিয়ে গেলেও ৭ ঘণ্টার পর যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে নগরের সাগরদীঘিরপাড় এলাকায় আসামি ধরতে গেলে এ ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। আহত সিআইডি কর্মকর্তার নাম খুরশেদ আলম।

তিনি সিলেট সিআইডিতে উপপরিদর্শক (এসআই) পদে কর্মরত রয়েছেন। 

গ্রেপ্তার হওয়া রাজু নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা। তার দেহ তল্লাশির সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য পরিচয়ের একটি ভিজিটিং কার্ড পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তার বিরুদ্ধে সিলেটের তিন থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন, আঘাত, চুরি, ব্ল্যাকমেইলিংয়ের ছয়টি মামলা রয়েছে।

ছবি এডিট করে অশ্লীল ছবিতে রূপান্তর করে যৌন হয়রানি ও ব্লাকমেইলিংয়ের করতেন তিনি।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বেলা আড়াইটার দিকে সিআইডি সিলেট মহানগর ও জেলার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ডিআইজি ড. মোহাম্মদ আল মামুনুল আনসারী।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানায় সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ধারার মামলার আসামি রহিম উদ্দিন রাজুকে গ্রেপ্তারের জন্য রিকুইজিশন নিয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান করছিলেন সিআইডি সিলেট মহানগর ও জেলার উপপরিদর্শক মো. খোরশেদ আলম ও কনস্টেবল মো. জাকির হোসেন। সোমবার রাত ৯টায় অভিযানের এক পর্যায়ে সাগরদিঘির পাড় এলাকায় আসামিকে ধরতে গেলে তিনি নিজের সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে উপপরিদর্শক খোরশেদ আলমের বাম বগলের নিচে আঘাত করেন।

এতে প্রায় তিন ইঞ্চি গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং রাতেই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। এ সুযোগে ঘটনাস্থল থেকে আসামি রহিম উদ্দিন রাজু পালিয়ে যান।

এ ঘটনার পর পলাতক আসামি ধরতে যৌথভাবে অভিযানে নামে সিআইডি, কোতোয়ালী থানা ও বিমানবন্দর থানা পুলিশ। অভিযানের এক পর্যায়ে মঙ্গলবার ভোর রাত ৪টার দিকে নগরের দিকে নগরের মজুমদারি এলাকার সৈয়দ বাড়ির একটি মেস থেকে পালতক রাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে তার দেখ তল্লাশি করে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য পরিচয় সম্বলিত রাজুর ভিজিটিং কার্ড জব্দ করে পুলিশ। 

অভিযানে অংশ নেওয়া দলের সদস্যদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া আসামির দেখানো স্থান থেকে খোরশেদ আলমকে আঘাতে ব্যবহৃত ছুরিটি সাগরদীঘি এলাকার সরকারি নালা থেকে ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি ড. মোহাম্মদ আল মামুনুল আনসারী আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃত রাজুর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি, শাহপরাণ ও কানাইঘাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন, আঘাত, চুরি, ব্ল্যাকমেইলিংসহ একাধিক মামলা রয়েছে। 

অভিযোগ রয়েছে, তিনি এক বাদীর ছবি এডিট করে অশ্লীল ছবিতে রূপান্তর করে যৌন হয়রানি ও ব্ল্যাককমেইলিং করে আসছিলেন। এ ঘটনায় সিআইডির কনস্টেবল জাকির হোসেন বাদী হয়ে নতুন অভিযোগ দাখিল করেছেন।

পুলিশ জানায়, পলাতক ও ঝুঁকিপূর্ণ আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি হামলার ঘটনায় নতুন মামলা রুজুর প্রক্রিয়াও চলছে এবং আক্রমণের উদ্দেশ্য, পরিকল্পনা ও সহযোগীদের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) ভোর ৪টার দিকে নগরীর এয়ারপোর্ট থানাধীন মজুমদারী এলাকার সৈয়দ বাড়িস্থ একটি মেস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর দেহ তল্লাশিতে তার কাছ থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য পরিচয়ে একটি ভিজিটিং কার্ড পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে সিআইডি সিলেটের পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা বলেন, আহত পুলিশ কর্মকর্তা খোরশেদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

দৈনিক পুনরুত্থান /

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন