পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি পেলেন সাবেক আইজিপি মামুনের আইনজীবী
চব্বিশের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরই মধ্যে এ রায়ের কপি হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
বুধবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামুনের আইনজীবী নিজেই। তবে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে ঠিক কবে রায়ের কপিটি পেয়েছেন তা বলতে রাজি হননি যায়েদ।
সাজার বিরুদ্ধে আপিল করবেন কিনা— জানতে চাইলে মামুনের আইনজীবী বলেন, এ বিষয়ে এখনও মামুনের পরিবারের সম্মতি পাইনি। তার পরিবারের সঙ্গে পরামর্শের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে, ১৭ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের পাশাপাশি ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল-১। একই সঙ্গে তাদের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া, একই মামলায় পাঁচ বছরের সাজা পান চৌধুরী মামুন। এর পরদিন তথা ১৮ নভেম্বর রায়ের সত্যায়িত কপির জন্য আবেদন করেন তার আইনজীবী যায়েদ।
এ মামলার পাঁচটি অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন। কিন্তু রায়ে দুটি অভিযোগে ছয়টি ঘটনা আনেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে অভিযোগ-১ এ তিনটি ঘটনা আনা হয়।
এর প্রথমটি হলো— ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া। দ্বিতীয়ত ওই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মাকসুদ কামালের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনে আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে ফাঁসি দেবেন বলে উসকানি ও আদেশ। এছাড়া, অপরাধ সংঘটনে আসামিরা নিজেদের অধীনস্তদের কোনো বাধা দেননি। তৃতীয়ত এরই ফলশ্রুতিতে রংপুরে আবু সাঈদকে গুলি ছুড়ে হত্যা করে পুলিশ। এসব অপরাধে শেখ হাসিনা ও কামালের আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল।
দুই নম্বর অভিযোগেও তিনটি ঘটনা আনেন ট্রাইব্যুনাল। এক নম্বর ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর ফোনালাপ পাওয়া যায়। এসব কথোপকথনে ড্রোনের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের অবস্থান নির্ণয়, ছাত্র-জনতাকে হেলিকপ্টার ও মারণাস্ত্র ব্যবহার করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এ অপরাধ সংঘটনে অধীনস্তদের কোনো বাধা দেননি আসামিরা।
যার ফলশ্রুতিতে, একই বছরের ৫ আগস্ট চানখারপুলে ছয়জন আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। যা এ অভিযোগে ঘটনা নম্বর দুই। তিন নম্বর ঘটনা— ওই দিন তথা ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এসব অপরাধে হাসিনা-কামালের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়, যা জুলাইয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ করবে সরকার। এছাড়া উভয় অভিযোগে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
দৈনিক পুনরুত্থান /
- বিষয়:
- সাবেক আইজিপি মামুন
- আইনজীবী
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
আপনার মতামত লিখুন: