বরগুনা,-১ আসনের বিএনপি'র মনোনীত প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহারের দাবি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বরগুনা-১ (বরগুনা সদর-আমতলী-তালতলী) আসনে বিএনপির প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে দলীয় অঙ্গনে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক বিতর্ক। দলীয় সিদ্ধান্তে জেলা বিএনপির আহবায়ক মো. নজরুল ইসলাম মোল্লাকে প্রার্থী ঘোষণার পর ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
মনোনয়ন প্রত্যাশী ছয়জন প্রার্থী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে নজরুল ইসলাম মোল্লার মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন। অভিযোগপত্রটি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জানাগেছে, দলের স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ৩ নভেম্বর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বরগুনা-১ আসনে নজরুল ইসলাম মোল্লাকে প্রার্থী ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই দলীয় বিভাজন ও ক্ষোভ বাড়তে থাকে। অভিযোগকারী ছয় নেতার মধ্যে রয়েছেন— বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সাংসদ মো. মতিয়ার রহমান তালুকদার, বরগুনা জেলা বিএনপির প্রথম যুগ্ম আহবায়ক মো. ফজলুল হক মাস্টার, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট গাজী তৌহিদুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. রেজবুল কবির, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ওমর আবদুল্লাহ শাহীন এবং জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক আসমা আজিজ।
অভিযোগপত্রে তারা উল্লেখ করেছেন, নজরুল ইসলাম মোল্লা ও তার পরিবার বরগুনা জেলা বিএনপিকে ‘পরিবারতন্ত্রে’ পরিণত করেছেন। তাদের পরিবারের ৮ জন বর্তমানে কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। এতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেন ফজলুল হক মাস্টার। তিনি বলেন, জনগণের ভোটেই এমপি নির্বাচিত হবেন। তাই জনগণের ম্যান্ডেট ও তৃণমূলের মতামত বিবেচনায় নিয়ে প্রার্থী পুনর্বিবেচনা করা উচিত। জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক আসমা আজিজ বলেন, গত ১৬ বছর নির্যাতন-জুলুম সহ্য করেও দলের পাশে থেকেছি।
জনপ্রিয় ও ত্যাগী নেতাকে প্রার্থী করা সময়ের দাবি। বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ও প্রয়াত মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের সাবেক এপিএস ওমর আবদুল্লাহ শাহীন বলেন, দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে ভুল তথ্য দিয়ে নজরুল ইসলাম মোল্লা মনোনয়ন নিয়েছেন। তৃণমূলের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে। সাবেক সংসদ সদস্য মতিয়ার রহমান তালুকদার বলেন, ২০০১ সালে সামান্য ভোটে পরাজিত হয়ে উপনির্বাচনে জয় পেয়েছি। পরে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে তদন্ত করে মনোনয়ন দেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক ও মনোনীত প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, দলের হাই কমান্ড আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। যারা অভিযোগ দিয়েছেন, তারা একাধিকবার নির্বাচনে জামানত হারিয়েছেন। হাই কমান্ডের সিদ্ধান্ত অমান্য করে অভিযোগ তোলা দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী। তিনি আরও বলেন, তারা ইচ্ছা করলে অন্য দলে গিয়ে জায়গা করে নিতে পারেন। দলের নেতৃত্বের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
দৈনিক পুনরুত্থান /
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
আপনার মতামত লিখুন: