জলঢাকায় কৃষি কাজে নারীরা, কাজের মূল্য ১৫০ টাকা

বাংলাদেশের জনসংখ্যার বিশাল অংশ নারী। তাই জাতীয় উন্নয়নের পূর্বশত নারীর উন্নয়ন। সকল ক্ষেত্রে নারীর সমসুযোগ ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা জাতীয় উন্নয়ন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একান্ত অপরিহার্য। নারীরা গৃহস্থালী কাজের বাহিরে ও কৃষিতে অগ্রদূত হিসেবে ভূমিকা রেখে চলেছেন। নারীরা আমাদের কৃষি,সমাজ-সংসার কে মহিমান্বিত করে,কষ্টগাঁথা আমাদের সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীদের অবদান অপরীশীম ।


বিশেষ করে নীলফামারীর জলঢাকায় কৃষি ও উন্নয়ন কাজে নারীদের অবদান এক অনবদ্য অধ্যায়।
জলঢাকা উপজেলায় নারীরা কৃষি কাজে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছেন। উপজেলার দারিদ্র ও অসহায় পরিবারের নারীরা অন্যের জমিতে কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করে থাকেন। এই নারীরা কাজে পুরুষের সমপরিমান কাজ করলেও মজুরি বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকেন বিভিন্ন সময় ।
উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের গাবরোল হাজীপাড়া এলাকার নারী শ্রমিক তাহেরা, জয়নব বলেন,আমরা গরীব আমাদের কোন জমি না থাকায় অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে আসছি এবং কৃষিকাজই তাদের পেশা । কিন্তু জলঢাকায় কৃষি কাজে ও উন্নয়নে নারীরা ভালো কাজ করলেও পুরুষদের তুলনায় নারী শ্রমিকরা কম মজুরি কম পান। একজন পুরুষ যেখানে দিনে কাজ করে ৪০০ টাকা মুজুরী হলেও শ্রম সমান করেও নারী শ্রমিকরা পান ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।
উপজেলার ডাউয়াবারী ইউনিয়ন চরভরট পাড়ার নারী শ্রমিক রানী বলেন, আমরা জমিতে ধান লাগানো, আগাছা পরিস্কার, ধান কাটা মাড়াই সহ সকল কাজ পুরুষদের সমান করলেও মজুরি কম পাই।
শৌলমারী ইউনিয়নের বানপাড়া এলাকার নারী শ্রমিক মায়া জানান, জমিতে ধান রোপণ ও কাটা মাড়াইসহ বিভিন্ন কৃষি কাজ দীর্ঘদিন ধরে করে আসছি। তিনি আরো বলেন, জমিতে কাজে গেলে রোদ, বৃষ্টি- মাথার উপর দিয়ে যায়। কিন্তু সে তুলনায় আমাদের অসুখ-বিসুখ খুব কম। আমরা সহজেই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা করে কৃষিকাজ করে থাকি।


কৈমারী ইউনিয়নের বাধ এলাকার নারী শ্রমিক রাহেলা জানান, নারীদের কারনে হাজার হাজার একর জমিতে বিভিন্ন কৃষি পান্য উৎপাদন হচ্ছে। যা এ এলাকার খাদ্যের চাহিদা মিটিয়ে নিজেরা স্বাবলম্বী হয়েছেন ।
গাবরোল টগরার ডাঙ্গা এলাকার পুরুষ শ্রমিক সোবহান ও কনক জানান এ অঞ্চলের কৃষি কাজে পুরুষ শ্রমিকদের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। তারা বলেন, নারী শ্রমিকরা সংসারের পাশাপাশি কৃষিকাজে অভাবনীয় সাফল্য এনেছেন। অন্যের জমিতে কাজ করার পাশাপাশি নিজেরা ফসলচাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন এলাকার নারীরা বলেন, এ অঞ্চলের জঙ্গল পরিস্কার করে সব জমিকে ফসলি জমিতে পরিণত করেছেন। সেই জমিতে ধান সহ সকল ফসল উৎপাদনে নারী শ্রমিকদের অবদান রয়েছে সবচেয়ে বেশি। তারা জানান, নারীদের কৃষি শ্রমিক হিসেবে সাংবাধানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদানসহ নায্য মজুরি নিশ্চিত করার দাবী জানান।।
দৈনিক পুনরুত্থান /
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আপনার মতামত লিখুন: