নীরবতা ভেঙে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে যা বললেন শেখ হাসিনা
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি শক্তিগুলোর হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। কয়েক সপ্তাহের কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং এরপর গণবিক্ষোভের মুখে গত সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। এরপর ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যান।
গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নিয়ে কথা বলেছেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। এবার শনিবার দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে একটি বার্তা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকটের পেছনে ‘বিদেশি শক্তির হাত’ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়ার কয়েকদিনের মধ্যে ক্ষমতাচ্যুতির জন্য বিদেশি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমি যদি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সেন্টমার্টিন ও বঙ্গোপসাগর ছেড়ে দিতাম, তাহলে ক্ষমতায় থাকতে পারতাম।’ অনেক দিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের টানাপোড়েন চলছিল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, তিনি এক ‘শ্বেতাঙ্গ’ ব্যক্তির কাছ থেকে একটি প্রস্তাব পেয়েছেন। তাকে বলা হয়, বিমানঘাঁটি করতে দেয়ার বিনিময়ে তিনি সহজে ক্ষমতায় আসতে পারবেন।
শেখ হাসিনা বিবৃতিতে নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে এ ধরনের বিদেশি শক্তির হাতে ‘ব্যবহার’ না হতে সতর্ক করেছেন। তার অভিযোগ নবগঠিত অন্তর্বতী সরকারের ১৭ সদস্যের মধ্যে অন্তত চারজন বিএনপির প্রতিনিধি এবং তিনজন জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘লাশের মিছিল যাতে দেখতে না হয়, সেজন্য আমি পদত্যাগ করেছি। তারা (ছাত্রদের) লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল; আমি তা হতে দেইনি। আজ যদি আমি দেশে থাকতাম তাহলে আরও প্রাণহানি হতো, দেশের আরও সম্পদ ধ্বংস হত।’
জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে ছাত্র বিক্ষোভের জেরে কয়েকশ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডাসহ বেশকিছু রাষ্ট্র এসব হতাহতের ঘটনার তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলাদেশের জনগণ নিজেদের জন্য একটি গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করায় দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ইউনূস নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করা হয়।
দৈনিক পুনরুত্থান / নিজস্ব প্রতিবেদক
আপনার মতামত লিখুন: