পাথরঘাটায় ক্ষমতার দাপটে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার কৃষি ক্ষেত নষ্ট করে জমি দখলের অভিযোগ

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা কালমেঘা ইউনিয়নে পূর্ব কালমেঘা ৬নং ওয়ার্ডে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জমি দখলের অভিযোগ উঠছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।


সরেজমিনে খবর নিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগী নুরু শিকদার পিং মৃত ছোমেদ শিকদার গং দীর্ঘ ৪০বছর ধরে পৈতৃক জমি ভোগ দখল করে আসছে, এর মধ্যে কোনো ধরনের ঝামেলা ছিলোনা। গত ৫ আগস্ট দেশে প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পরেই নুরু শিকদারের উপর এ অমানসিক নির্যাতনের স্টিম রোলার ওঠে বলে অভিযোগ করা হয় । মোঃ জাহাঙ্গীর আলম পিতা মৃত কাজেম আলী হাওলাদার গং রা পার্শ্ববর্তী জমি ক্রয় করে সেই জমির মধ্য দিয়ে রাস্তা হয়। বলে দাবি করেন নুরু শিকদার। নুরু শিকদার দাবি করেন বিবাদীরা আমার বাবা ও দাদার উত্তরাধিকার সূত্রে আমি মালিক । আমরা কারো কাছে জমি বিক্রি করি নাই। বিবাদী জাহাঙ্গীরগণ এবং আমাদের খতিয়ান সম্পূর্ণ আলাদা।
আমাদের খতিয়ান -৪৭২,১১৯,দাগ নাম্বার- ২২১১,২২১২ জমির পরিমান-৩.২০ একর কতৃপক্ষ জাহাঙ্গীর গং এর খতিয়ান নম্বর -২৮১ দাগ নাম্বার-২২১০ এবং তাদের জমির পরিমান-২.০৯ একর কাদের নাজির গং থেকে প্রতিপক্ষরা ক্রয় সূত্রের মালিক। কতৃপক্ষ জাহাঙ্গীর গং এর জমির উপর দিয়ে চলাচলের রাস্তা যায় যা বর্তমানে দৃশ্যমান রয়েছে এবং মানুষ ও গাড়ি চলাচল করে। গত ৫ আগস্ট দেশে প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের সাথে সাথেই আমাদের উপরে তারা চড়াও এবং গত ১০/০৫/ ২০২৫ ইং তারিখে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর সীমানা নির্ধারণ চেয়ে নামে মাত্র একটি আবেদন করে। সেখানে আমিসহ সাতজনকে বিবাদী করে একটি অভিযোগ জমা দেন।
তারপরে স্থানীয়ভাবে যতীন্দ্রনাথ কানুনগো এর নেতৃত্বে একটি সালিশি হয়। সেখানে দুই পক্ষেরই সালিশিগণ ১২/০৬/২৫ উপস্থিতি থেকে সালিশি অসম্পূর্ণ রেখে যে যার মত চলে যায়। পরবর্তী ২৭/০৬/২৫ তারিখ রেখে যে যার মত করে চলে যায় । কিন্তু প্রতিপক্ষরা ক্ষমতার জোরে মাটিকাটা বেকু ও মাহেন্দ্র দিয়ে নুরু শিকদারের মাছের ঘের ও কৃষি ক্ষেত সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়। যেখানে নুরু শিকদারের প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এবং নুরু শিকদারের ছেলে আল-মিন কে একটি বাড়িতে আটকে রেখে জিম্মি করে রাখা হয় পরবর্তীতে নুরু শিকদার ৯৯৯এ ফোন করে পুলিশ দিয়ে উদ্ধার করা হয়। এদিকে নুরু শিকদারের ভাইগ্না মোহাম্মদ আবু সালেহ কে বেধারক মারধর করা হয়। মারধরের কারণে তার একটি হাত ভেঙ্গে যায় পরবর্তীতে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে এখনো চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
আরো অভিযোগ ওঠে নুরু শিকদারের পরিবার জাহাঙ্গীরগং এর দাপটের কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধসহ বাইরের সম্পূর্ণ কাজকর্ম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নুরু শিকদার আরো বলেন ২৭ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আমার চাষকৃত কৃষিক্ষেত ও মাছের ঘের ধ্বংস করে দেওয়া হয় আমি কোথাও গিয়ে বিচার পাচ্ছি না।
এদিকে প্রতিপক্ষ জাহাঙ্গীর জানান,আমরা আওয়ামী লীগের আমলে আমাদের জমি দখল নিতে পারিনি, এখন সময় হয়েছে, আমরা আইনে সব নিয়ম মেনেই কয়েক বার শালিসি করে আমাদের জমি ফেরত পেয়েছি, তাই জমি দখল নিয়েছি। আবার কেনো ২৭তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করব।


এদিকে যতীন্দ্রনাথ কানুনগো এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান এই জমিজমা সংক্রান্ত ঘটনায় সালিশি তে আমি সব পাঁচজন উপস্থিত থেকে সালিশি করেছি দুই পক্ষ থেকে দুইজন সার্ভেয়ার কাজ করেছি। আমরা সালিশি ঠিকঠাক মতোই করে যাচ্ছিলাম। এমন সময় নুরু শিকদার নামে ব্যক্তি ২৭/০৬/২৫ তারিখ নির্ধারণ করে সময় চেয়ে আমাদের কাছে আর্জি করে। আমরা সময়ও দিয়েছিলাম। কিন্তু জাহাঙ্গীরগং সেই তারিখে রাজি না হয়ে জমি দখল করে নেয়।এখানে এর চেয়ে আমাদের আর কিছু বলার নেই।
যতীন্দ্রনাথ কানুনগো আরো বলেন, জমি যদি জাহাঙ্গীরগং পেয়ে থাকে নুরু শিকদারের ক্ষতিপূরণ পাবেন। কৃষি ক্ষেত ধ্বংস করার কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি।
এদিকে পাথরঘাটা থানায় যোগাযোগ করা হলে, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, আমি ট্রিপল নাইনে ফোন পেয়ে ফোর্স নিয়ে আমি ঘটনার স্থলে গিয়ে নুর শিকদারের ছেলেকে আল-আমিনকে উদ্ধার করি এবং দুই পক্ষকে শান্ত করে চলে আসি।
দৈনিক পুনরুত্থান /
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আপনার মতামত লিখুন: