ফ্লোটিলার শেষ জাহাজটিও আটকে দিলো ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের জন্য সমুদ্রপথে ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামে যে ত্রাণবাহী নৌযানবহর যাচ্ছিল, সেই বহরের শেষ নৌযান ম্যারিনেত্তিকে আটকে দিয়েছে ইসরায়েলের নৌবাহিনী।


আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় সকালের দিকে ম্যারিনেত্তিকে আটকেছে ইসরায়েলের নৌসেনার। নৌযানটিতে ক্রুসহ মোট ৬ জন ছিলেন। তাদের সবাইকেসহ নৌযানটিকে ইসরায়েলের বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ মিশনের পরিচালনাকারী স্বেচ্ছাসেবী জোট ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশ (এফএফসি)-এর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। ম্যারিনেত্তি নামের নৌযানটিকে আটকের লাইভস্ট্রিম ভিডিও প্রকাশ করেছে এফএফসি।
ফিলিস্তিনিভিত্তিক আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন, গ্লেবাল মুভমেন্ট টু গাজা, মাগরেব সুমুদ ফ্লোটিলা এবং সুমুদ নুসানতারা— এই চার সংগঠনের জোট এফএফসি। ২০০৮ সালে এই জোট গঠনের পর থেকে ফিলিস্তিনের গাজা ও পশ্চিম তীরে বেশ কয়েকবার ত্রাণ পাঠিয়েছে এফএফসি।
গত আগস্ট মাসে গাজায় খাদ্য, ওষুধবাহী ৪৩টি নৌযান পাঠানোর ঘোষণা দেয় এফএফসি জোট এবং এই মিশনের নাম দেওয়া হয় ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’। সুইডেনের নাগরিক এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশ আন্দোলন কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি ও রাজনীতিবিদ মান্ডলা ম্যান্ডেলাসহ ৪৪টি দেশের ৫০০ জন নাগরিক ছিলেন সেই মিশনে। এই নাগরিকদের কেউ পার্লামেন্টারিয়ান, কেউ আইনজীবী, কেউ রাজনৈতিক আন্দোলনকর্মী এবং কেউ বা স্বেচ্ছাসেবী।
গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা; কিন্তু গাজার জলসীমায় কাছাকাছি যাওয়ারি পরপরই একটি ব্যতীত সবগুলো নৌযান আটক করে ইসরায়েলের নৌবাহিনী। নৌযান, ক্রু এবং আরোহীদের নিয়ে যাওয়া হয় ইসরায়েলের বন্দরে।


গত বুধবার রাতে প্রথমে ১৩টি নৌযান আটকায় ইসরায়েলের নৌবাহিনী; কিন্তু তারপরও বাকি ৩০টি নৌযান গাজার উদ্দেশে এগিয়ে যাচ্ছিল। এই ৩০টি জাহাজের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল পোল্যান্ডের নৌযান ম্যারিনেত্তি।
পরের দিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একে একে ২৯টি নৌযান আটক করে ইসরায়েলের নৌ সেনারা; কিন্তু অনেকটা অগ্রসর থাকায় তখনও তারা ম্যারিনেত্তির নাগাল পায়নি।
অবশেষে শুক্রবার সকালে আটক করা হয় ম্যারিনেত্তি, এবং সেটিতে থাকা যাত্রী ও ক্রুদের। নৌযানটি আটকের পর এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “যুদ্ধরত এলাকায় বিনা অনুমতিতে প্রবেশের দায়ে নৌযানটিকে আটক করা হয়েছে। যাত্রী এবং ক্রুদের সবাই নিরাপদে আছে।”
প্রসঙ্গত, গত ১৮ বছর ধরে গাজার সমুদ্র উপকূল অবরোধ করে রেখেছে ইসরায়েল। গাজায় কোনো সমুদ্রবন্দর নেই এবং ইসরায়েলের অবরোধের কারণে আন্তর্জাতিক কোনো জাহাজ বা নৌযান গাজা উপকূলের কাছাকাছি যেতে পারে না।


দৈনিক পুনরুত্থান /
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আপনার মতামত লিখুন: