বরগুনার আমতলী থানা থেকে জব্দকৃত জাটকা ইলিশ লুট!
নৌ-বাহিনী ও উপজেলা মৎস্য বিভাগের অভিযানে জব্দকৃত প্রায় ১,৫০০ কেজি জাটকা ইলিশ আমতলী থানার ভেতর থেকে প্রকাশ্যে লুট হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনার পর থেকেই আমতলীসহ পুরো বরগুনা জেলায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মাঝে নিন্দার ঝড় ওঠে এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানানো হয়।
সূত্র জানায়, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ১ নভেম্বর থেকে সাগর ও নদীতে জাটকা ইলিশ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু বরগুনা, তালতলী ও কলাপাড়ার কিছু অসাধু জেলে নিয়ম অমান্য করে অবাধে মাছ শিকার চালিয়ে যাচ্ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে নৌ-বাহিনী ও উপজেলা মৎস্য বিভাগ যৌথ অভিযান চালিয়ে চারটি গাড়িতে করে পাচারকৃত ১,৫০০ কেজি জাটকা জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে।
বিকেলে ওই মাছ স্থানীয় ৫০টি এতিমখানায় বিতরণের প্রস্তুতি চলাকালে হঠাৎ দুই শতাধিক লোক—যাদের মধ্যে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও ছিলেন বলে অভিযোগ—থানা প্রাঙ্গণে ঢুকে সমস্ত মাছ লুট করে নিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, পুলিশের সামনেই মাছ লুট হয়েছে, কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উপজেলা প্রশাসন যদি সঠিকভাবে বণ্টন করত, তাহলে এমন বিশৃঙ্খলা হতো না। তারা আরও বলেন, আগের দিন রাতেও মাছ জব্দ করা হয়েছিল, কিন্তু প্রশাসন সেই মাছ ও গাড়ির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।
এর ফলেই এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তন্ময় কুমার বলেন, আমি প্রশিক্ষণে ছিলাম। ১,৫০০ কেজি জাটকা ৫০টি এতিমখানায় বিতরণের সময় শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তি এসে মাছ লুট করে নেয়। আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, জব্দকৃত অর্ধেক মাছ বিতরণ করা গেছে। বাকি অর্ধেক মানুষ নিয়ে গেছে। আমি ঠেকানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁন বলেছেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। থানা একটি সুরক্ষিত জায়গা—সেখান থেকে মাছ লুট হওয়ার প্রশ্নই আসে না। তারপরও যদি লুট হয়ে থাকে, তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয়দের দাবি, স্থানীয়রা প্রশাসনের গাফিলতি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদাসীনতাকে এই ঘটনার মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা ঘটনাটির স্বচ্ছ তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
দৈনিক পুনরুত্থান /
- বিষয়:
- বরগুনা
- জাটকা ইলিশ
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
আপনার মতামত লিখুন: