• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ২৯ কার্তিক ১৪৩২

Advertise your products here

  1. জাতীয়

মানবতাবিরোধী অপরাধ : শেখ হাসিনার মামলার রায় ১৭ নভেম্বর


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০১:৩৪ পিএম
মানবতাবিরোধী অপরাধ : শেখ হাসিনার মামলার রায় ১৭ নভেম্বর

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ সাজার প্রত্যাশা করছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। 

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে শেখ হাসিনার মামলার রায়ের দিন ধার্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ প্রত্যাশার কথা জানান।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আমরা আদালতের কাছে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে আবেদন করেছি। আদালত সুবিবেচনা প্রয়োগ করবেন। তবে আমাদের পক্ষ থেকে প্রেয়ার হচ্ছে যে, এই অপরাধের দায়ে আসামিদের যেন সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হয়।

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের রায়ের দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ মামলার রায় আগামী ১৭ নভেম্বর (সোমবার) ঘোষণা করা হবে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা ৯ মিনিটে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ দিন নির্ধারণ করেন। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

গত ২৩ অক্টোবর এ মামলায় সমাপনী বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রধানমন্ত্রীসহ হেভিওয়েট নেতাদের যেভাবে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল; সেসব বর্ণনা ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরেন তিনি। একইসঙ্গে শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেন। পরে আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর যুক্তি উপস্থাপনের কয়েকটি বিষয়ে জবাব দেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এরপর তাদের কিছু কথার পাল্টা উত্তর দেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী আমির হোসেন। পরে রায়ের তারিখ ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। এর সপ্তাহখানেকের মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলার রায় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে জুলাই গণহত্যার প্রথম কোনো রায় শুনবে এ জাতি।

এ মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের নামও রয়েছে। তবে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। এজন্য যুক্তিতর্কে শেখ হাসিনা-কামালের চরম দণ্ড বা সর্বোচ্চ সাজা চাইলেও তার ব্যাপারে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিয়েছে প্রসিকিউশন। মামুনের আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদও তার অ্যাকুইটাল (খালাস) চেয়েছেন। সবমিলিয়ে সাবেক এই আইজিপির মুখে হাসি ফুটবে নাকি অন্য কিছু; তা জানা যাবে রায় ঘোষণার দিন।

শেখ হাসিনার এ মামলায় ৮৪ সাক্ষীর মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন। তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় চলতি বছরের ৩ আগস্ট। প্রথম সাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের বীভৎসতার চিত্র তুলে ধরেন খোকন চন্দ্র বর্মণ। ৮ অক্টোবর মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরার মাধ্যমে শেষ হয় সাক্ষ্যগ্রহণের ধাপ। এরপর প্রসিকিউশন ও স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীর যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয় ২৩ অক্টোবর। 

এ মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। এর মধ্যে রয়েছে উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা ও আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার ও শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার। সাক্ষী করা হয়েছে ৮৪ জনকে। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ মামলার প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

দৈনিক পুনরুত্থান /

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন