আবদুল হামিদকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়নি, জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে গত ৭ মে গভীররাতে ঢাকা ত্যাগ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কিশোরগঞ্জের এক মামলার আসামি হয়েও তিনি কীভাবে দেশত্যাগ করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে শুরু হয় নানা সমালোচনা।


এরপর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারসহ চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। আবদুল হামিদের দেশত্যাগ নিয়ে আলোচনার মধ্যে কয়েকটি দলের দাবির মুখে গত মাসে আওয়ামী লীগের কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ করা হয়। একই সঙ্গে স্থগিত করা হয় দলটির নিবন্ধনও। এর মধ্যেই সবাই ভুলে যেতে বসেছেন আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ইস্যু।
৩১ দিন পর দেশে ফিরে এসে আবারো আলোচনার জন্ম দিলেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। রবিবার দিবাগত রাত দেড়টায় থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে (টিজি-৩৩৯) ঢাকায় আসেন আবদুল হামিদ। অবতরণের পর ১টা ৪৫ মিনিটে তিনি হুইল চেয়ারে করে ইমিগ্রেশন কাউন্টারে যান। সেখানে তাকে দীর্ঘক্ষণ হুইল চেয়ারে বসি অপেক্ষমান রাখা হয়।
পরে রাত পৌনে ৩টার দিকে তার ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হলে তিনি বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। এদিকে আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও দেশে ফেরার পরপরই কেন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, সেই কারণ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, আব্দুল হামিদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট না থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, কিছু কিছু মামলার ইনভেস্টিগেশন হয়নি।
ইনভেস্টিগেশন হওয়ার পরে যে দোষি সাব্যস্ত হয়েছেন তাদের আইনের আওতায় নেওয়া হয়েছে। আপনারাই সবসময় বলেছেন যে নির্দোষরা যেন কোনো অবস্থায় সাজা না পায়। এজন্য আমাদের ইনভেস্টিগেশনটা করতে দেন, ইনভেস্টিগেশন করার পর যেই দোষি হোক না কেন কেউ আইনের বাইরে থাকবে না। তারে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। দোষি যে হবে তারে আমরা শাস্তি দেব।


আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন মো. আবদুল হামিদ। গত ৭ মে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যান তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ তুষার ও শ্যালক ডা. আ ন ম নৌশাদ খান যান। দেশের চিকিৎসকদের পরামর্শেই তিনি বিদেশে গিয়েছিলেন বলে জানা যায়।
আবদুল হামিদ ২০১৩ সালে ২৪ এপ্রিল প্রথম দফায় দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি, ২০১৮ সালে ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথগ্রহণ করেন। তার মেয়াদ শেষে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন। বঙ্গভবন ছাড়ার পর আবদুল হামিদ রাজধানীর নিকুঞ্জে তারা বাসায় উঠেছিলেন।
ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলি করার ঘটনায় কিশোরগঞ্জে সদর মডেল থানায় ১৪ জানুয়ারি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবুদল হামিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহেনা, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সামা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১২৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।
দৈনিক পুনরুত্থান /
- বিষয়:
- আবদুল হামিদ
- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আপনার মতামত লিখুন: