• ঢাকা
  • সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২

Advertise your products here

  1. জাতীয়

বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা ৩ নেতাসহ আসামী ৮৭৬


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১:২০ পিএম
বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা ৩ নেতাসহ আসামী ৮৭৬

বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষে দুই পক্ষেই থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। মালায় মনোনয়ন প্রত্যাশী ৩ নেতাকে আসামী করা হয়েছে।

 

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়েছে। পৃথক দুটি মামলায় ১২৬ জনের নাম উল্লেখসহ ৮৭৬ জনকে আসামী করা হয়েছে। তবে এসব মামলায় কোনো আসামী এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার নেই বলে জানা গেছে।

 

রবিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলের দিকে মামলা দুটি দায়েরের বিষয় নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহামুদুল হাসান। এর আগে শনিবার দিবাগত রাতে দুই পক্ষ মামলা দুটি রুজু করেন বলে তিনি জানান।

 

পুলিশ ও মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, উপজেলা বিএনপির বিবদমান দুই গ্রুপের একটি মামলার বাদী হয়েছেন মজিবুর রহমান। তিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর সমর্থক। তাঁর দায়েরকৃত মামলায় ১৮৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০-২৫০ জনকে আসামী করা হয়েছে ৷ এ মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য খোন্দকার নাসিরুল ইসলামকে।

 

অপর মামলার বাদী হয়েছেন উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। তিনি খোন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থক। তাঁর মামলায় ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩০০-৪০০ জনকে আসামী করা হয়েছে। এ মামলায় প্রধান আসামী হিসেবে উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুকে (৬০) এবং দুই নম্বর আসামী করা হয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনএমের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহ মো. আবু জাফরকে(৮০)। এছাড়া তিন নম্বর আসামী করা হয়েছে  সালথা উপজেলার খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ বাচ্চুকে(৭৫)। তাকে হুকুমের আসামী হিসেবে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

দলীয় সুত্রে জানা যায়, আসামীদের মধ্যে খোন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও শামসুদ্দীন মিয়া ঝুনু ফরিদপুর-১ (আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালী) আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তবে দলের প্রাথমিক তালিকায় দুজনের কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। অপর দিকে সাবেক সংসদ সদস্য বিএনএম নেতা শাহ মো: আবু জাফরও মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে জানা যায়। গুঞ্জন চলছে তিনি বিএনপিতে ফিরে আসছেন অথবা জোটের প্রার্থীও হতে পারেন। 

এই দুই গ্রুপের মধ্যে গত এক বছর যাবৎ রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের লড়াই চলে আসছিল। এর জের ধরে গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকালে উপজেলা সদরের ওয়াপদা মোড় এলাকায় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে কর্মসূচি থেকে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষকারীদের হাতে দেশীয় অস্ত্র চাইনিজ কুড়াল, রামদা ইত্যাদি দেখা যায়।

এ সংঘর্ষে শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু সমর্থিত উপজেলা বিএনপির একাংশের কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুরসহ ১৫ টি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া আশপাশের অন্তত ১০/১২টি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্ততপক্ষে অর্ধশত কর্মী সমর্থকেরা আহত হোন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে একটি মামলার বাদি মজিবুর রহমানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

অপর মামলার বাদী সিরাজুল ইসলাম বলেন,৭ নভেম্বর আমাদের বিকালের কর্মসূচির আয়োজন করা হয় এবং ঝুনু মিয়ার কর্মসূচি ছিল সকালে। কিন্তু আমাদের কর্মসূচিকে বাঁধাগ্রস্ত করার জন্য উনারা বিকালে আয়োজন করে পরিকল্পিতভাবে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা করে। যার পেছনে উস্কানি দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মো. আবু জাফর ও আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু। এই বাচ্চু সাহেবের ছেলের নেতৃত্বে খারদিয়া গ্রাম থেকে অস্ত্র নিয়ে লোকজন এসেছিল। এছাড়া তাঁর দায়েরকৃত মামলা ভিন্নদৃষ্টিতে নেয়ার জন্য পাল্টা মামলা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. মাহামুদুল হাসান বলেন, গতকাল শনিবার পৃথক দুটি অভিযোগ করা হয়। তাঁর প্রেক্ষিতে রাতেই পেনালকোড ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দুটি রুজু হয়েছে। এখনও কোনো আসামীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশী অভিযান অব্যাহত আছে।প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা সদরের ওয়াবদা মোড় এলাকায় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচিতে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির একাংশের কার্যালয়ে ভাঙচুরসহ আগুন দেওয়া হয়। এছাড়া ১৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া আশপাশের ১০-১২টি দোকান ভাঙচুর করা হয়। প্রায় এক ঘণ্টা সংঘর্ষের পর সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

দৈনিক পুনরুত্থান /

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন