রাজশাহীতে নারী হত্যার রহস্য উদঘাটন, ৭২ ঘণ্টায় ৩ জন গ্রেপ্তার

রাজশাহীর পবা উপজেলার বাগসারা এলাকায় এক নারীর বিবস্ত্র লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন-বাগসারা গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে মো. তারা মিয়া (৩৩), মহানন্দাখালী এলাকার ইছুল মণ্ডলের ছেলে ফারুক হোসেন (৩০) এবং একই এলাকার এন্তাজ আলীর ছেলে হেলাল উদ্দিন (২৩)।
রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি) সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নিহত নারীর নাম বিউটি বেগম। ধানখেত থেকে লাশ উদ্ধারের পর পবা থানা পুলিশ ও মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের যৌথ অভিযানে হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়।


তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শারিফুর রায়হান তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের শনাক্ত করেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার (১৯ অক্টোবর) রাত সোয়া ১২টার দিকে নগরীর সোনাদিঘী মোড় এলাকা থেকে তারা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ধারাবাহিক অভিযানে মহানন্দাখালী এলাকা থেকে ফারুক হোসেন ও পিল্লাপাড়া এলাকা থেকে হেলাল উদ্দিনকে আটক করা হয়।
সোমবার আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে তারা মিয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে জানান, বিউটি বেগম টাকার বিনিময়ে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন। ৫ হাজার টাকায় চুক্তি হলেও টাকা না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ ধানের জমিতে ফেলে রাখা হয়।
নিহতের ছেলে মো. মিলন প্রাং (২৫) পবা থানায় দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করেন, তাঁর মা বিউটি বেগম প্রায় ১৫ বছর আগে পারিবারিক কলহে স্বামীর সংসার ছেড়ে রাজশাহীর আলাইবিদিরপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং স্থানীয় এক হোটেলে কাজ করতেন। দুই বছর আগে তিনি গাইবান্ধার মো. রাশেদ নামে এক ব্যক্তিকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
গত ১৮ অক্টোবর সকালে রাশেদ ফোনে মিলনকে জানান, বিউটি বেগমের ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। পরে মিলন মায়ের বাসায় গিয়ে তালাবদ্ধ ঘর দেখতে পান। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পারেন, কয়েকদিন ধরে ঘরটি বন্ধ রয়েছে। এরপর খবর পান, পবা থানার বাগসারা এলাকায় এক অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার হয়েছে। নিহতের কোমরে থাকা চাবি দিয়ে ঘরের তালা খুলে তিনি নিশ্চিত হন, মৃতদেহটি তাঁর মা বিউটি বেগমের।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডে এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ বলছে, মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং আরও জড়িত কেউ থাকলে তাঁদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।


দৈনিক পুনরুত্থান /
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আপনার মতামত লিখুন: