শরীয়তপুরে ফের সংঘর্ষ, বোমা বিস্ফোরণ
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আবারও দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (২ নভেম্বর) ভোরে বিলাসপুর ইউনিয়নের চেরাগ আলী বেপারিকান্দি এলাকায় অন্তত ৫০ থেকে ৬০টি ককটেলের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হন।
আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে চলতি বছর ৫ এপ্রিল বিলাসপুরে একই ধরনের ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। আজকের ঘটনার আট সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকা জুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৫ এপ্রিলও বিলাসপুরে একই ধরনের ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। তখন কুদ্দুস বেপারী ও আবদুল জলিল মাদবরের সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় উভয় নেতা কারাগারে যান।
সম্প্রতি কুদ্দুস জামিনে মুক্তি পেয়েছেন, তবে আবদুল জলিল এখনো কারাগারে রয়েছেন।
তারা জানান, আজকের সংঘর্ষের মূলে ছিলেন ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন বেপারী ও একই এলাকার তাইজুল ইসলাম ছৈয়াল। নাসির উদ্দিন বর্তমান চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারীর সমর্থক, আর তাইজুল স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুল জলিল মাতবরের অনুসারী। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বুধাইরহাট এলাকায় তাদের সমর্থকদের মধ্যে ছোটখাট বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটে, এতে আজকের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
ওই ঘটনার একটি আট সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, একদল তরুণ ও যুবক হাতে লাল রঙের বালতি নিয়ে দৌড়াচ্ছেন। তারা কিছু একটা তুলে ছুড়ে মারছেন, মুহূর্তের মধ্যেই বিকট শব্দে একের পর এক বিস্ফোরণ হচ্ছে। বিস্ফোরণের ধোঁয়ায় চারপাশ আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
উভয় পক্ষের বেশ কিছু বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। জানা যায়, সংঘর্ষে যুবদল কর্মী সালাউদ্দিন ও কামালসহ কয়েকজন আহত হন। আহতদের জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এবং প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গিয়েছেন। পরে পুলিশ ও র্যাবের দুটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে জড়িত সন্দেহে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তবে যারা সরাসরি জড়িত ছিলেন তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।
ঘটনার বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন বেপারী ও তাইজুল ইসলামের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলে বন্ধ পাওয়ায় যায়। তারা আত্মগোপনে আছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় একাধিক সূত্র।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, বিলাসপুর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষ নাশকতা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়ে আসছিল। যদিও সম্প্রতি বিষয়টি কিছুটা শান্ত হয়, শনিবার ও রবিবার আবারও ইউপি সদস্য নাসির বেপারী ও তাইজুল ইসলামের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। আমরা ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়েছি এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করেছি।
তিনি জানান, এই সংঘর্ষে দুজন আহত হয়েছেন। যারা এ ধরনের নাশকতার সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি।
দৈনিক পুনরুত্থান /
- বিষয়:
- শরীয়তপুর
- সংঘর্ষ
- বোমা বিস্ফোরণ
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
আপনার মতামত লিখুন: