• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২

Advertise your products here

  1. জাতীয়

শাহ মো: আবু জাফর কি বিএনপিতে ফিরছেন?


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০৮:৩৫ পিএম
শাহ মো: আবু জাফর কি বিএনপিতে ফিরছেন

বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শাহ মো: আবু জাফর বিএনপিতে ফিরছেন বলে গুঞ্জন চলছে। 

ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী, মধুখালী, আলফাডাঙ্গা) আসনের রাজনীতিতে এ নিয়ে  হাটে-মাঠে-ঘাটে বেশ উত্তাপ চলছে।  সম্প্রতি বিএনপি ২৩৭টি আসনে মনোনয়নের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করলেও ফরিদপুর-১ আসনটি বাদ রয়েছে। এখানে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। ফলে এ আসনটি এখন আলোচনার শীর্ষে রয়েছে । কে পাচ্ছেন এ আসন থেকে মনোনয়ন, তা নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে নানা গুঞ্জন ও আলোচনা। 

 সম্প্রতি ফরিদপুর-১ (আলফাডাঙ্গা-বোয়ালমারী-মধুখালী) আসনের উপজেলা ও পৌর বিএনপির নবনির্বাচিত কমিটি ঘোষনা নিয়ে কার্যত বিএনপি দু'টি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এর এক অংশে নেতৃত্বে রয়েছেন জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য খোন্দকার নাসিরুল ইসলাম এবং অপর অংশে রয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা বিএনপির উপজেলা পর্যায়ের অন্যতম নেতা সামছুদ্দিন মিয়া ঝুনু। বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গায় প্রায় প্রতিদিন দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। ঝাড়ু মিছিল, মশাল মিছিল, বিক্ষোভসহ প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ঝুনু গ্রুপ। নাসির গ্রুপও অনুরূপ কর্মসূচি পালন করেছে। এরা দু'জনই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। এমন অবস্থায় সাধারণ ভোটারগণ বিকল্প ভাবতে শুরু করেছেন বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। 

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, প্রবীণ রাজনীতিবিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও চারবারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর পুনরায় বিএনপিতে যোগ দিতে যাচ্ছেন।

সূত্র জানায়, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে একাধিকবার দল পরিবর্তনের পর এবার তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে শেষবারের মতো ধানের শীষের পতাকাতলে ফিরে আসার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। ফরিদপুর-১ আসনে শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফরের বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও তার প্রত্যাবর্তনের খবরে আশাবাদী।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ফরিদপুর-১ আসনে খোন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে বিএনপি এই আসনে পিছিয়ে পড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতে অভিজ্ঞ ও গ্রহণযোগ্য নেতা হিসাবে শাহ্ মো: আবু জাফর হতে পারেন দলের শেষ ভরসা। একাধিক সূত্র বলছে, সব কিছু ঠিক থাকলে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন পাবেন চারবারের এই সাবেক সংসদ সদস্য।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনএম নেতা শাহ্ মো: আবু জাফর সংবাদ কর্মীদের বলেন, "এ আসনের মনোনয়ন স্থগিত রয়েছে। তবে গুঞ্জনের বিষয়টি আমিও শুনেছি, দেখা যাক কী হয়। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ছাড়া কেউ কিছু বলতে পারবেন না।" বিএনপিতে যোগদানের বিষয়ে তিনি বলেন, "বিএনপিতে ফিরে এলেই কি মনোনয়ন পাওয়া যাবে, তার কোনো নিশ্চয়তা আছে কি? বিষয়টি শুধু তারেক রহমান জানেন। দেখা যাক কী হয়।"

অপর দিকে আরিফুর রহমান দোলনের মনোনয়নের গুঞ্জনে বিএনপিতে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।  আবার আন্দালিব রহমান পার্থর দল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) থেকে আরিফুর রহমান দোলনের মনোনয়নের গুঞ্জনও জোরালো ভাবে শোনা যাচ্ছে । বিএনপির অন্যতম মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি খোন্দকার নাসিরুল ইসলামের মুখ থেকে দোলনের নাম প্রকাশের পর থেকে এ বিষয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে ।

ফরিদপুর-১ আসনটি মূলত আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলে বিবেচিত। এই আসনে বিগত ৩৪ বছরে ৮টি সংসদ নির্বাচনে সাতবার আওয়ামী লীগ ও একবার বিএনপি জয় পেয়েছে। শুধু ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খোন্দকার নাসিরুল ইসলাম বিজয়ী হয়েছিলেন ক্ষণকাল স্থায়ী সংসদে। এবার মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে মাঠে কাজ করেছেন কৃষকদলের সহ-সভাপতি, সাবেক এমপি খোন্দকার নাসিরুল ইসলাম এবং বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি, সাবেক ছাত্রনেতা সামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে এই দুই নেতা নিজ নিজ অনুসারীদের নিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি পরিচালনা করছেন।

এ বিষয়ে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী কৃষকদল নেতা খোন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, 'বিগত প্রায় ২৫ বছর পর এ আসনে বিএনপি প্রার্থীর জয়ের একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। এখনো এ আসনে ঘোষণা আসেনি। হয়তো বিএনপির শরিক দলের কাউকে এখানে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য খালি রাখা হতে পারে। শোনা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগের বেনিফিশিয়ারি ও শেখ হাসিনার বেয়াই খোন্দকার মোশাররফ হোসেনের আত্মীয় দোলনকে আন্দালিব রহমান পার্থর দল বিজেপি থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে। তাই যদি হয়, তাহলে এ আসন থেকে চিরতরে বিএনপির নাম মুছে যাবে বলে নেতাকর্মীরা বলছেন। এতে লাভবান হবে জামায়াতের প্রার্থী। তারপরও আশাবাদী শরিক দলের কাউকে না দিলে আমিই পাব এ আসনের মনোনয়ন।'

বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি সামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু বলেন, এ আসনটি স্থগিত রয়েছে। আমি আমার নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচার-প্রচারণায় ছিলাম এবং আছি। আমি ছাত্রদল থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আমার মধ্যে কোনো মিশেল নেই। অন্যরা কেউ কেউ জাতীয় পার্টি থেকে এবং অন্য দল থেকে এসেছে। আর আরিফুর রহমান দোলন সম্পর্কে তেমন কিছু বলতে চাই না। তিনি কৃষকলীগের নেতা ছিলেন, দুর্নীতি মামলায় জড়িত এবং আ.লীগ আমলে বেশ লাভবান হয়েছেন। তিনি যদি এ আসনে আসেন, তাহলে বিএনপি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফরিদপুর-১ আসনে মনোনয়ন গুঞ্জনের বিষয়ে আরিফুর রহমান দোলনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তাঁর কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নাই।

দৈনিক পুনরুত্থান /

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন