শেরপুরের গর্ব আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এখন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট
গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার জানকিপুর গ্রামের কৃতি সন্তান মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এখন মাগুরা জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
ছোট থেকেই আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ অনেক মেধাবী ছাত্র ছিলেন। সততা, দক্ষতা, মেধা দীর্ঘ প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা ও নীতিনিষ্ঠ কর্মদক্ষতার মাধ্যমে নিজেকে দেশের প্রশাসনে এক উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
শৈশব ও কৈশর কেটেছে নকলার মাটিতে। এখান থেকেই তিনি গড়ে তুলেছিলেন তার মেধা ও নৈতিকতার ভিত্তি। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন নকলায়।
২০০০ সালে পাঠাকাটা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি ও ২০০২ সালে ময়মনসিংহ নাসিরাবাদ কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন ।
এরপর তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাক্রম ২০তম স্থান অর্জন করে ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (DVM) কোর্সে ভর্তি হন।
২০০৭ সালে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি এবং ২০০৯ সালে মাইক্রোবায়োলজিতে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।
শিক্ষার প্রতি গভীর অনুরাগের ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে জাপানের ইয়ামাগুচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএস ডিগ্রি অর্জন করেন।
জানা যায়, তিনি ২০১০ সালের পহেলা ডিসেম্বর ২৮তম বিসিএস এ প্রশাসন ক্যাডারে মেধাক্রম ৮২তম হয়ে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে সুনামগঞ্জে যোগদান করেন।
এরপর সততা, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দ্রুতই তিনি প্রশাসনের আস্থা অর্জন করেন।
তার কর্মজীবনে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন— ইউএনও হিসেবে মাঠ প্রশাসনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে সফলভাবে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন এবং সর্বশেষ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
অবশেষে বাংলাদেশ সরকার তার অভিজ্ঞতা, কর্মনিষ্ঠা ও নেতৃত্বগুণের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে মাগুরা জেলার জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।
পারিবারিকভাবে তিনি একটি সুশিক্ষিত ও সম্মানিত পরিবারের সদস্য। তার পিতা মৃত শাহ মো. আব্দুল আউয়াল তিনি ১৯৭২ সালে এসএসসি ও ১৯৭৪ সালে ময়মনসিংহ মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পাস করেন। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্পোরাল ছিলেন। মাতা মানছুরা বেগম ১৯৭৭ সালে ইলেক্টিভ সায়েন্স বিভাগ থেকে মেট্রিক পাস করেন। তিনি একজন গৃহিণী হলেও সন্তানদের শিক্ষায় ও নৈতিকতায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাদের ছয় সন্তানের সবাই উচ্চশিক্ষিত ও নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত।
আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এর আরও দুই ভাই ও তিন বোন রয়েছেন তিনি দ্বিতীয় সন্তান।
ছোট ভাই আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া থেকে স্নাতক সম্পুর্ন করে বর্তমানে শেরপুর সরকারি ভিক্টোরিয়া স্কুলের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
এবং বর্তমান নিয়োগ পাওয়া মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জেলা প্রশাসক, মাগুরা জেলায় (ডিসি) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
ছোট বোন কৃষিবিদ উম্মুল ওয়ারা (মুন্নি):বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন শেষে প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
শাহজাদী উলফাত আরা মুক্তা ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। শাহ মো. আব্দুল্লাহ আল মাহবুব রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি (অনার্স) ফাইনাল বর্ষের শিক্ষার্থী এবং শাহজাদী ইসমাত আরা মুনা ঢাকা মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, নকলার জানকিপুর গ্রামের এই আদর্শ পরিবারের কৃতি সন্তান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মাগুরা জেলার ডিসি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন তিনি শেরপুর জেলার গর্ব।
দৈনিক পুনরুত্থান /
- বিষয়:
- শেরপুর
- জেলা ম্যাজিস্ট্রেট
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
আপনার মতামত লিখুন: