• ঢাকা
  • বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩২

Advertise your products here

  1. জাতীয়

ঢাকা থেকে ৪৩৪ কি.মি দূরের ভারতের জলপাইগুড়ির মানুষ কাঁদছেন খালেদার জন্য


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০৪:৩৭ পিএম
ঢাকা থেকে ৪৩৪ কি.মি দূরের ভারতের জলপাইগুড়ির মানুষ কাঁদছেন খালেদার জন্য

তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুর শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে ভারতের জলপাইগুড়িতে। ঢাকা থেকে ৪৩৪ কিলোমিটার দূরের এ শহরের মানুষ কাঁদছেন তার জন্য।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন খালেদা জিয়া। তার জন্মের সময় জলপাইগুড়ি ছিল অভিক্ত ভারতের অংশ।

সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জলপাইগুড়িতে এখনো উজ্জ্বল খালেদা জিয়ার শিশুকালের স্মৃতি। তার মৃত্যু সেখানকার মানুষের জন্যও হারানো ও বেদনার।

১৯৪৫ সালে জলপাইগুড়িতে জন্ম হয় তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর। সেখানে তিনি তার প্রাথমিক শিক্ষাও শুরু করেন। কিন্তু তার বাবা পরবর্তীতে পরিবারসহ বাংলাদেশে চলে আসেন।

জলপাইগুড়ির ব্যবসায়ী নীলাঞ্জন দাসগুপ্ত টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, “খালেদা জিয়ার বাবা মোহাম্মদ ইস্কান্দার আমার বাবার চা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাস অ্যান্ড কো-র সঙ্গে ছিলেন। খালেদা জিয়া তাদের নয়াবস্তির বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু ১৯৫০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে যায় তার পরিবার।”

জলপাইগুড়িভিত্তিক ইতিহাসবিদ উমেশ শর্মা বলেছেন, “খালেদা জিয়ার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়েছিল এ শহরে। তাকে নয়াবস্তি এলাকার যোগমায়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল। তিনি সেখানে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। এরপর তাকে সমাজ পাড়ার সুনিতিবালা সদর গার্লস হাইস্কুলে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু ওই সময় তার পরিবারের অনেকে (তৎকালীন) পূর্ব পাকিস্তানে চলে যান। খালেদা জিয়ার বাবাও পরে চলে যান।”

খালেদা জিয়া যে বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেটি এখনো আছে বলে জানিয়েছেন এ ইতিহাসবিদ। কিন্তু বাংলাদেশে চলে আসার আগে খালেদা জিয়ার বাবা ইস্কান্দার মির্জা অমরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী পরিবারের কাছে তার সম্পত্তি বিক্রি করে চলে আসেন। নয়াবস্তির সেই বাড়িতে এখনো চক্রবর্তী পরিবারের মানুষ থাকেন।

খালেদা জিয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বন্ধু সিয়ন মন্ডল। তিনি যখন প্রথম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হন তখন সিয়ন মন্ডল খুব খুশি হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন দাস অ্যান্ড কো-এর প্রোপাইটার দাসগুপ্ত। তিনি বলেছেন, “আমার এখনো মনে আছে সিয়ন দিদি কতটা খুশি হয়েছিলেন যখন খালেদা জিয়া প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন। যারা তাকে চেনেন তার মৃত্যুতে সবাই ব্যথিত হয়েছেন।”

শুহরিদ মন্ডল নামে আরেক ব্যক্তি বলেছেন, “খালেদা জিয়ার পরিবার জলপাইগুড়িতে প্রায়ই তার জন্মস্থান দেখতে আসতেন। তারা সবাই আমার বাড়িতে উঠতেন। তার এক আত্মীয় মাত্র কয়েক মাস আগে তার জন্মস্থান দেখতে এসেছিলেন। দেশ যদি কখনো ভাগ না হতো তাহলে কত ভালো হতো, আমরা এ নিয়ে প্রায়ই আলোচনা করতাম। যদিও আমি খালেদা জিয়াকে সরাসরি কখনো দেখিনি। তবে তাকে আপন মনে হতো। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশের পাশাপাশি এখানকার মানুষও শোক প্রকাশ করছেন।”

সুনিতিবালা নামে যে স্কুলে খালেদা জিয়া পড়াশোনা করেছেন ওই স্কুলের প্রাথমিক শাখার প্রধান শিক্ষক অরূপ দে বলেছেন, “আমি জেনেছি খালেদা এখানকার শিক্ষার্থী ছিলেন। ক্লাস শুরু হলে আমরা একটি শোক অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা করছি।”

দৈনিক পুনরুত্থান /

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন