• ঢাকা
  • সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২

Advertise your products here

  1. জাতীয়

সালমান শাহর মৃত্যু : হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০৭:৩১ পিএম
সালমান শাহর মৃত্যু : হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ

চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যু মামলাটি এবার হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার সোমবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক রিভিশন আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন। 

সালমান শাহর বাবা কমর উদ্দিনের অভিযোগ এবং ঘটনায় জড়িত রিজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদের জবানবন্দি সংযুক্ত করে হত্যা মামলা দায়েরের আদেশ দেন বিচারক। বাদীপক্ষের আইনজীবী আবিদ হাসান বলেন, সালমান শাহর মৃত্যুর পর তার বাবা কমর উদ্দিন রমনা মডেল থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেন। পরের বছর তিনি মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদন করলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি। এ ঘটনায় রিজভী ওরফে ফরহাদ নামে এক আসামি স্বীকারোকক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সেখানে সালমানকে কীভাবে হত্যা করা হয়, তা উঠে আসে। তারপরও মামলাটি আলোর মুখ দেখেনি।

সবশেষ পিবিআই মামলাটি তদন্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। আদালত সেই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আসামিদের অব্যাহতি আদেশ দেন। আজ আদালত সেই আদেশ রহিত করেন। একইসঙ্গে কমর উদ্দিনের অভিযোগ এবং ঘটনায় জড়িত রিজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদের জবানবন্দি সংযুক্ত করে হত্যা মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন। তদন্ত করে রমনা মডেল থানা পুলিশকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ। সে সময় এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছিলেন তার বাবা প্রয়াত কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদন জানান তিনি। অপমৃত্যু মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত।

১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি। প্রতিবেদনে সালমান শাহ’র মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। ওই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়। সে সময় সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা দায়ের করেন।

২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। এরপর প্রায় ১১ বছর মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল। ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। এ প্রতিবেদনে সালমান শাহ’র মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সালমান শাহ’র মা নীলা চৌধুরী ছেলের মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান এবং ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেওয়ার আবেদন করেন। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নীলা চৌধুরী আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে নারাজি আবেদন দাখিল করেন। নারাজি আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন তার ছেলে সালমান শাহ’র হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারেন।

মামলাটি এরপর র‌্যাব তদন্ত করে। তবে র‌্যাবের তদন্তের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা করে। ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ ৬-এর বিচারক ইমরুল কায়েস রাষ্ট্রপক্ষের রিভিশনটি মঞ্জুর করেন এবং র‌্যাবকে মামলাটি আর তদন্ত না করার আদেশ দেন। এরপর থেকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।

সর্বশেষ ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইর পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম ছয়শ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সেখানে জানানো হয়, ‘সালমান শাহ হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি, পারিবারিক কলহের জেরে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন।’ পরের বছর ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি খারিজ করে দেন আদালত। এই খারিজের বিরুদ্ধে সালমান শাহের মায়ের আইনজীবী ফারুক আহমেদ রিভিশন মামলা দায়ের করেন। এরপর ২০২২ সালের ১২ জুন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত রিভিশনটি গ্রহণ করেন।

দৈনিক পুনরুত্থান /

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন