স্ত্রী সাবিকুন নাহারের সঙ্গে বিচ্ছেদের পথে হাঁটছেন আবু ত্বহা!

আলোচিত ইসলামী বক্তা আবু ত্বহা মোহাম্মদ আদনান-এর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ফের প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন তার স্ত্রী সাবিকুন নাহার সারাহ। স্বামীর বিরুদ্ধে পরকীয়া এবং তার প্রতিষ্ঠানে নারীদের সঙ্গে অবাধ মেলামেশার অভিযোগ এনে শনিবার (১১ অক্টোবর) সকালে সারাহ সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি বিস্ফোরক পোস্ট দেন।


স্ত্রী সাবিকুন নাহারের একের পর এক পরকীয়ার অভিযোগের পর এবার বিচ্ছেদের ইঙ্গিত দিলেন তোহা নিজেই। ফলে প্রশ্ন উঠেছে—তাহলে কি সত্যিই ভেঙে যাচ্ছে তোহা ও সাবিকুন নাহারের সংসার?
এর আগে, গত ২ অক্টোবর রাতে একই ধরনের পোস্ট দিয়েছিলেন সারাহ, যা নিয়ে তুমুল আলোচনা সৃষ্টি হয়েছিল। তখন আবু ত্বহা আদনান তার মোবাইল ফোন হারানোর কথা বলে অভিযোগ অস্বীকার করলে সারাহ সেই পোস্টটি সরিয়ে নেন এবং ক্ষমাও চেয়েছিলেন। এর পরপরই তোহা আদনান একটি দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ওয়াল্লাহি আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। এমনকি যদি তুমি ইমাম হাসানের কাত্তেলের মতো হতে, তবুও আমি তোমাকে ক্ষমা করতাম। কারণ আমি তোমাকে এক আল্লাহর জন্যই ভালোবাসি।
এরপর এক সময় তাদের দাম্পত্য সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে বলে মনে হলেও, ১১ সেপ্টেম্বর ফের নতুন করে একই অভিযোগ আনেন সাবিকুন নাহার। ওই পোস্টে তিনি লেখেন, তোহা এখনো ওই বিমানবালার সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছেন এবং তাকেই বিয়ে করতে চান। মন্তব্যে তিনি আরও জানান, আমি কোনো মিথ্যা বলিনি। আগেও নিজের সম্মান বিসর্জন দিয়েছিলাম তোহার সংশোধনের আশায়, কিন্তু ভক্তরা তাকে পরিশুদ্ধ প্রমাণ করতে গিয়ে আমাকে অপমানিত করছে।
স্ত্রীর পুনরায় অভিযোগের দুই দিন পর সোমবার (১৩ অক্টোবর) তোহা আদনান নিজের ফেসবুক পোস্টে ‘উপসংহার’ শিরোনামে লেখেন, ভুল সত্তায় অন্ধ ভালোবাসার উপযুক্ত প্রতিদানই সম্ভবত আমার প্রাপ্য ছিল। আমি পেয়েছি, মেনেও নিয়েছি। তবে আল্লাহর কসম—আর না। তিনি আরও বলেন, হে আমার জাতি, শুধু এতটুকু বলতে চাই—আরশের মালিকের কসম, আমাকে একের পর এক মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়েছে। কাবার রবের শপথ, আমি জিনাকার নই।
মোহাম্মদের রবের কসম, আমি ব্যভিচারী নই। যার হাতে আমার প্রাণ, তার কসম, আমি কোনো পরনারীর সঙ্গে হারাম সম্পর্কে জড়িত নই। তোহা জানান, বিষয়টি এখন দেশের বরেণ্য ওলামায়ে কেরামদের উপস্থিতিতে শরীয়াসম্মত ও আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের পথে রয়েছে।


তিনি বলেন, ফা সবরুন জামিল! আমি বিষয়টি দেশের বরেণ্য মুরব্বি ওলামায়ে কেরামের উপস্থিতিতে শারিয়া সম্মতভাবে যাবতীয় আইনি প্রক্রিয়া মেনে সমাধানের পথে হাটছি! যারা ছেড়ে গেছেন, যেতে পারেন। যারা সাথে ছিলেন, তাদের বলব যদি ভবিষ্যতে প্রিয় মানুষদের! দ্বারা আরও কোনো ইলজাম, হেনস্থা, বা মিথ্যা মামলার স্বীকার হই (যার আশংকা উড়িয়ে দেইনা) অন্তত আপনাদের দুয়ার আমাকে শামিল রাখবেন!
এছাড়াও বিচ্ছেদ পরবর্তী সময়ে সাবিকুন্নাহারকে নিয়ে যেন কোনো আলোচনা না করা হয় সে বিষয়ে ত্বহা লিখেছেন, অনুগ্রহ করে যখন আমি কোনো দেহের পোশাক থাকব না তখন সেই দেহের ব্যাপারে আমাকে, আমার পরিবার ও দ্বীনকে জড়িয়ে অনলাইন গরম করে আপনারা নিজেদের গুনাহ বাড়াতে যাবেন না! আমাদের সবার দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য এটাই হবে উত্তম অবস্থান! কোটি মানুষের শহরে আমার দুটো সন্তান আছে! দুয়া করবেন তাদের বাবা যেন তাদের থেকে মাহরুম না হন! তারাও বাবার বুকের উষ্ণতা থেকে বঞ্চিত না হয়! আল্লাহর কসম! তারা আমার কাছে অনেক বেশিই প্রিয়! অনেক ভালবাসার! যাদের মুখের দিকে তাকিয়েই বছরের পর বছর সবর করে গেছি! আমার হুরপরি আইশাহ! আমার "ইউসুফ" কলিজার টুকরা উসমান!
এদিকে তার এই পোস্ট ঘিরে আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। অনেকে সহানুভূতি জানাচ্ছেন তোহার প্রতি, আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন ইসলামিক আলোচকদের ব্যক্তিজীবনে এমন বিতর্কের প্রভাব নিয়ে।
সব মিলিয়ে, আবু তোহা মোহাম্মদ আদনান ও সাবিকুন নাহারের দাম্পত্য জীবন এখন এক অনিশ্চিত পথের মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে।


দৈনিক পুনরুত্থান /
- বিষয়:
- সাবিকুন নাহার
- আবু ত্বহা
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আপনার মতামত লিখুন: