প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে পর্যটকদের পদচারণায় সাগরকন্যা কুয়াকাটায়
পর্যটক খরায় ভুগতে থাকা কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে। শারদীয় দূর্গা পুজা আর সাপ্তাহিক বন্ধকে সামনে রেখে চারদিনের সরকারি ছুটিতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে সাগরকন্যা কুয়াকাটায়।
এ বিষয়ে হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, দীর্ঘদিন পরে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক থাকলে সারাবছর পর্যটকদের আনাগোনা থাকবে কুয়াকাটায়। অনেক দিন পরে আমাদের ব্যস্থতা বেড়েছে। আশা করি সামনের দিনেও এমন দৃশ্য চোখে পড়বে।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে আশেপাশের ১কিঃমিঃ জায়গা জুড়ে পর্যটকদের হৈ-হুল্লোড়। সমুদ্রের বুকে কেউ ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। কেউবা আবার দলবেঁধে সাতার কাটছে। আনন্দ উপভোগের দৃশ্য স্মৃতিপটে ধারণের জন্য কেউ আবার ছবি তুলছে।
তবে সৈকতের বেহাল দশা দেখে হতাশ আগত পর্যটকরা। তারা বলছে এত সুন্দর সৈকতের এমন বিশ্রী অবস্থা! যত্রতত্র পড়ে আছে জিও টিউব আর জিও ব্যাগ। এসবে নির্বিঘ্নে উপভোগ করা যায় না আসল সৌন্দর্য। এবিষয়ে পর্যটক হাসান মাহমুদ মিয়াত বলেন, আমি এই প্রথম কুয়াকাটায় বেড়াতে আসলাম। সৈকত আর সাগরের ঢেউ আমাকে বেশ মুগ্ধ করেছে। তবে জিওটিউব ও জিও ব্যাপ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় সৈকতটি শ্রীহীন হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ায় ব্যস্থতা দেখা গেছে কুয়াকাটার সকল রেস্তোরাঁসহ পর্যটননির্ভর সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। হোটেল মোটেলের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। তাদের আবাসিক হোটেলে বুকিং ভালো আছে। পর্যটকদের উপস্থিতিতে স্বস্তি ফিরছে। তাদের আশা এখন থেকে এমন পর্যটকদের আনাগোনা থাকলে তাদের সংকট কাটিয়ে উঠবে খুব শ্রীঘ্রই।
এবিষয়ে বেস্ট সাউদার্ন আবাসিক হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার আবুল কালাম বলেন, টানা ছুটিতে আমাদের আবাসিক হোটেল শতভাগ রিজার্ভেশন। অনেকদিন পরেই এমন পর্যটক আসল কুয়াকাটায়। আমরা পর্যটকদের চাহিদাকে সব সময়ই প্রায়োরিটি দেই।
পর্যটক আগমনে বেচা বিক্রি বেড়েছে সৈকত লাগোয়া ব্যবসায়ীদের। আগের থেকে ব্যস্থতা বেড়েছে। সৈকত লাগোয়া চা বিক্রেতা মো. সোহেল বলেন, গতকাল থেকে চোখে পড়ার মত পর্যটক কুয়াকাটায় আসছে। বেঁচা বিক্রি বাড়তে শুরু করছে। আশা করি ঘাটতি পুষিয়ে উঠতে পারব।
ক্যামেরাম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গতকাল থেকেই মোটামুটি পর্যটক আসতে শুরু হয়েছে। আজ ভালোই পর্যটক বাড়ছে। আমরা আমাদের সংকট কাটাতে পারব। আচার বিক্রেতা মো. জসিম মুসুল্লি বলেন, পর্যটকরা এখন বেশি ক্রয় করে না। শুধুই ঘুরে ফিরে চলে যায়। তবে আগের চাইতে বিক্রি বাড়ছে। সৈকত লাগোয়া খাবার হোটেলর ব্যবস্থাপক মো. সেলিম বলেন, বিগত দিনে বেচা কিনা খুবই খারাপ ছিল । গতকাল ভালোই বিক্রি করতে পারছি। আজ আরো বাড়বে। এখন আমাদের দুশ্চিন্তা কিছুটা কাটবে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিওনের পুলিশ সুপার মো. আনসার উদ্দিন বলেন, আমরা সম্পূর্ণভাবে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রস্তুত। দেশে চলমান অস্থিরতা কেটে যাওয়ার ফলে পর্যটক বাড়ছে কুয়াকাটায়। তাদের নিরাপদ ভ্রমণে যা যা করা দরকার তা সব করা হবে।
দৈনিক পুনরুত্থান / নিজস্ব প্রতিবেদক
আপনার মতামত লিখুন: