• ঢাকা
  • বুধবার, ০৬ আগষ্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২

Advertise your products here

  1. জাতীয়

ওভাল টেস্টেই রেকর্ডের বৃষ্টি, এক ম্যাচেই ২১ রেকর্ড


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ০৫ আগষ্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১২:৫১ পিএম
ওভাল টেস্টেই রেকর্ডের বৃষ্টি, এক ম্যাচেই ২১ রেকর্ড

পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের সমাপ্তি ঘটেছে চরম নাটকীয়তায়। ওভাল টেস্টে ইংল্যান্ডকে মাত্র ৬ রানে হারিয়ে সিরিজে ৩–২ ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছে ভারত। ম্যাচটিতে মোহাম্মদ সিরাজের দুর্দান্ত বোলিংয়ের (৯ উইকেট) পাশাপাশি ব্যাট হাতে উজ্জ্বল ছিলেন শুভমান গিল, জাদেজা ও লোকেশ রাহুল। তবে উত্তেজনার পাশাপাশি রেকর্ডেরও সৃষ্টি হয়েছে এই টেস্টে। এক ম্যাচেই গড়া হয়েছে ২১টি রেকর্ড।

ভারতের জন্য এটি টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে কম ব্যবধানে জয়—শুধু ৬ রানে। আগের রেকর্ডটি ছিল ২০০৪ সালে মুম্বাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৩ রানের জয়। আর ওভাল টেস্টে জয় দিয়েই শেষ হলো রোমাঞ্চকর সিরিজ।

জো রুটের একাধিক ব্যক্তিগত রেকর্ড

ইংল্যান্ডের জো রুট একাই গড়েছেন একাধিক রেকর্ড। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে তিনিই প্রথম ব্যাটার যিনি ছুঁয়েছেন ৬ হাজার রানের মাইলফলক। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে তৃতীয়বারের মতো ৫০০ বা তার বেশি রান করলেন তিনি—এটি আগে কেউ করতে পারেননি। ঘরের মাঠে ২৪টি টেস্ট সেঞ্চুরি করে রিকি পন্টিং, কালিস এবং জয়বর্ধনেকে ছাড়িয়ে গেছেন রুট।

তাছাড়া, ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ডে রুটের রান এখন ২১১১, যা ঘরের মাঠে কোনো এক দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ডন ব্র্যাডম্যান কেবল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে করেছিলেন ২৩৫৪ রান। একই সঙ্গে ইংল্যান্ডের হয়ে ভারতের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ১৩টি টেস্ট সেঞ্চুরির মালিকও এখন রুট।

শুভমান গিল ও ভারতীয় ব্যাটারদের রেকর্ড

এই সিরিজে ব্যাট হাতে সবচেয়ে বড় নজর কাড়েন শুভমান গিল। পুরো সিরিজে করেন ৭৫৪ রান, যা ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে একক কোনো ব্যাটারের সর্বোচ্চ। এর আগে ১৯৯০ সালে গ্রাহাম গুচ করেছিলেন ৭৫২ রান।

ভারতের টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে একটি সিরিজে সবচেয়ে বেশি রান করেও গড়েছেন রেকর্ড—পেছনে ফেলেছেন সুনীল গাভাস্কারকে, যিনি ১৯৭৮–৭৯ সালের সিরিজে করেছিলেন ৭৩২ রান।

সঙ্গে ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজাও। তিনি পাঁচ ম্যাচের ছয় ইনিংসে ৫০ বা তার বেশি রান করেছেন, যা ভারত–ইংল্যান্ড সিরিজে অন্য কোনো ব্যাটারের নেই। লোকেশ রাহুলকেও যুক্ত করলে, এবারই প্রথম ভারতের তিন ব্যাটার একটি টেস্ট সিরিজে করেছেন ৫০০ বা তার বেশি রান।

সিরাজ ও আকাশদীপের অনন্য কীর্তি

মোহাম্মদ সিরাজ দুই ইনিংস মিলিয়ে নেন ৯ উইকেট। টেস্ট ইতিহাসে তিনিই প্রথম এশিয়ান বোলার, যিনি ইংল্যান্ডের মাটিতে অন্তত চারজন ইংলিশ ব্যাটারকে সাতবার করে আউট করেছেন।

নৈশপ্রহরী হিসেবে ব্যাট করতে নেমে আকাশদীপ করেন ৬৬ রান। ভারতের টেস্ট ইতিহাসে নৈশপ্রহরী হিসেবে এটি তৃতীয় ফিফটির ইনিংস। এর আগে সৈয়দ কিরমানি (১০১*) এবং অমিত মিশ্র (৫০ ও ৮৪) এই কীর্তি গড়েছিলেন।

জুটিতে ইতিহাস গড়েন ডাকেট ও ক্রলি

ইংলিশ ওপেনার বেন ডাকেট ও জ্যাক ক্রলি দু'ইনিংসে যথাক্রমে ৯২ ও ৫০ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন। ভারতের বিপক্ষে তাদের ওপেনিং জুটি এখন মোট নয়বার ৫০+ রানের পার্টনারশিপ করেছে, যা নতুন রেকর্ড। আগের রেকর্ডটি ছিল ডেসমন্ড হেইনস ও গর্ডন গ্রিনিজের নামে, যাদের ছিল আটবার ৫০+ জুটি।

এই জুটি ভারতের বিপক্ষে ১০০০ রান করা দ্বিতীয় ওপেনিং জুটি হিসেবেও ইতিহাসে নাম লেখায়, যেখানে প্রথম ছিলেন হেইনস-গ্রিনিজ জুটি।টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড যখন জয় থেকে মাত্র ৪২ রান দূরে, তখন তারা ৬ উইকেট হারিয়ে বসে। এর আগে কোনো দল জয় থেকে এত কাছে থেকেও এমনভাবে ভেঙে পড়েনি।

ওভাল টেস্টে এলবিডব্লিউ আউট হয় ১২টি, যা লন্ডনের এই মাঠে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ—২০০০ সালে ইংল্যান্ড–ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে হয়েছিল সর্বোচ্চ ১৪টি এলবিডব্লিউ।

এছাড়া, একমাত্র দলের হিসেবে ভারত এমন একটি সিরিজে জয় পেয়েছে যেখানে প্রতিটি টেস্টের ফলাফল নির্ধারিত হয়েছে পঞ্চম দিনে। ২০০০ সালের পর এমন ঘটনা এটিই চতুর্থ, এর আগে দেখা গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ (২০০১), দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড (২০০৪-০৫) এবং ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া (২০১৭-১৮) সিরিজে।

দৈনিক পুনরুত্থান /

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন