এক বছরে বন্ধ ২৩৯ শিল্প কারখানা, বিপাকে লক্ষাধিক শ্রমিক

গত এক বছরে দেশে দুই শতাধিক শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে লক্ষাধিক শ্রমিক তাদের কর্মসংস্থান হারিয়েছেন। কর্মসংস্থান হারিয়ে বিপাকে এসব শ্রমিকের পরিবারের সদস্যরা। কেউ কেউ অন্য পেশা বেছে নিলেও অনেকেই এখনো বেকার।


জমানো টাকা অথবা ঋণ করে চলছে তাদের সংসার।
শিল্পাঞ্চল পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত সময়ে দেশের ২৩৯টি শিল্প কারখানা বন্ধ হয়েছে। এতে এক লাখ এক হাজার ৮৯৩ জন শ্রমিক তাদের কর্ম হারিয়েছেন।
আস-সুবাহ নিটওয়্যার লিমিটেডের (বন্ধ) জেনারেল ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম জয় বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, যেহেতু আমি একজন জিএম।
আমার বেতন ৫০ হাজারের বেশি ছিল। দীর্ঘদিন চাকরি করায় কিছু টাকা জমিয়েছিলাম। সেই টাকা দিয়েই এখন সংসার চলছে। প্রতি মাসে আমার সংসারে ৪০ হাজার টাকা খরচ আছে, কিন্তু দুই মাস ধরে আমার কোনো আয় নেই।
দেশে চুরি-ডাকাতি এবং ছিনতাইয়ের প্রবণতাও বেড়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।


তিনি আরো বলেন, ‘কিছু দিনের মধ্যে সঞ্চয় শেষ হয়ে যাবে। তখন হয়তো আমারও বিকল্প রাস্তা খুঁজে বের করতে হবে। হোক সেটা ভালো বা খারাপ। দিনশেষে খাবারের ব্যবস্থা তো করতে হবে।
মেয়েদের স্কুলে পড়াচ্ছি হয়তো পড়াতে পারব না।’
বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় ভুগছেন চাকরি হারানো এসব শ্রমিকরা। কেউ কেউ বাসা ভাড়া না দিয়ে, দোকানের বাকি টাকা পরিশোধ না করেই গ্রামে ফিরে গেছেন বা অন্যত্র চলে গেছেন।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নতুন এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশের ৮০ শতাংশ পরিবারের খরচ এখন আয়ের থেকে বেশি।
তাদের তথ্য অনুযায়ী, দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৯৩ শতাংশে। ২০২২ সালে এই হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। অতি দারিদ্র্যের হার তিন বছর আগের ৫ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ হয়েছে।


বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২২ সালের খানা আয় ও ব্যয় জরিপ অনুযায়ী, দেশের দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। আর অতি দারিদ্র্যের হার ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। সেই হিসাবে পিপিআরসির সমীক্ষায় দেশে দারিদ্র্য ও অতি দারিদ্র্য—দুটিই উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
দৈনিক পুনরুত্থান /
- বিষয়:
- শিল্প কারখানা
- শ্রমিক
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আপনার মতামত লিখুন: