কেসিসির ৭১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা

২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য ৭১৯ কোটি ৫০ লাখ ৩৬ হাজার টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছে খুলনা সিটি করপোরেশন। কেসিসি প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার আজ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে নগর ভবনের শহীদ আলতাফ মিলনায়তনে প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের ৬১৮ কোটি ২৫ লাখ সাত হাজার টাকার সংশোধিত বাজেটও পেশ করেন কেসিসি প্রশাসক।


প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৪৫৫ কোটি ৯৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা এবং ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৭ কোটি ৬৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। এ ছাড়া সরকারি বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১৩০ কোটি ২৮ লাখ টাকা এবং বিশেষ প্রকল্পে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১৩৩ কোটি ২৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পটি শেষ হওয়ায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তুলনায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বরাদ্দ কম হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় বাজেটে।
কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শরীফ আসিফ রহমানের সভাপতিত্বে বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বাজেট কাম হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় কেসিসি প্রশাসক স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘বাজেট কোনো প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের খতিয়ান নয়, বরং এর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ভাবনা প্রতিফলিত হয়।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটও সেভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। খুলনাকে একটি শান্তি ও স্বস্তির নগরী হিসেবে গড়ে তোলাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এ জন্য নিজস্ব আয় বাড়ানোর পরিকল্পনার পাশাপাশি সরকার ও বিভিন্ন দাতা সংস্থার সহযোগিতা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে।’
বাজেটের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরতে গিয়ে প্রশাসক বলেন, ‘এটি একটি উন্নয়নমুখী বাজেট। নতুন কোনো কর আরোপ না করে বকেয়া পৌরকর আদায়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নবনির্মিত স্থাপনার ওপর প্রচলিত নিয়মে পৌরকর ধার্য, মার্কেট, দোকান, নতুন স্থাপনা নির্মাণ ও পার্কগুলোকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে নিজস্ব আয়ের সম্প্রসারণ করাই আমাদের লক্ষ্য। নগরীর ড্রেনেজব্যবস্থার উন্নয়ন ও জলাবদ্ধতা নিরসন, ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া প্রতিরোধে মশা নিধন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণসহ স্থাপনাগুলো রক্ষণাবেক্ষণের ওপর এ বাজেটে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কেসিসির দাপ্তরিক কার্যক্রমের আধুনিকায়নসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ের উন্নয়ন এবং শহীদদের স্মরণে সৃত্মিসৌধ নির্মাণের পরিকল্পনাও এ বাজেটে নেওয়া হয়েছে। বাজেটের সফল বাস্তবায়নে সব শ্রেণি-পেশার নাগরিকের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাড. শফিকুল আলম মনা, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন, মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাড. শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, সাবেক কাউন্সিলর মো. হাফিজুর রহমান মনি, বৃহত্তর খুলনা উনয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান, নাগরিক ফোরাম-খুলনার মহাসচিব ইকবাল হাসান তুহিন, বৃহত্তর আমরা খুলনাবাসীর সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান খোকন, জুলাই শহীদ শেখ মো. সাকিব রায়হানের বাবা শেখ মো. আজিজুর রহমান প্রমুখ। এ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা, নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতা, ছাত্র প্রতিনিধি, নগরীর বিশিষ্ট ব্যক্তি, গণমাধ্যমকর্মী ও কেসিসি কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।


এ সময় গণমাধ্যমকর্মী ও নাগরিক প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কেসিসির প্রশাসক বলেন, পরিবহন সুবিধার্থে নগর পরিবহনের জন্য বিআরটিসির সঙ্গে ইতোমধ্যে আলোচনা হয়েছে। অচিরেই দুটি বাস দেবে বিআরটিসি। ইজি বাইক নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান থাকায় কেবল শৃঙ্খলার মধ্যে আনার জন্য নম্বর প্লেট দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া সৌন্দর্যবর্ধনের নামে নগরীর ময়লাপোতা মোড় সংকুচিত করা, কেসিসির পাইকারি কাঁচাবাজার ট্রাক টার্মিনাল থেকে জোড়াগেটে স্থানান্তর, মশা নিধনের নামে ওষুধ কেনায় দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সেসব প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান কেসিসি প্রশাসক।
দৈনিক পুনরুত্থান /
- বিষয়:
- কেসিসি
- বাজেট ঘোষণা
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আপনার মতামত লিখুন: