• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

Advertise your products here

  1. জাতীয়

মুজিব কিল্লা প্রকল্পে চলছে ডিপিডি-এপিডির মচৎকার রসায়ন!


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: শনিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১:৫৩ পিএম
মুজিব কিল্লা প্রকল্পে চলছে ডিপিডি-এপিডির মচৎকার রসায়ন!

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিভিন্ন সেক্টরে দুর্নীতি নির্মূলে প্রাণান্তকর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ক্লিন ইমেজের প্রতিচ্ছবি, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড: ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এদিকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার আশীর্বাদপুষ্ট কিছু আমলার ছত্র ছায়ায় মুজিব কিল্লা প্রকল্পে চলছে দুর্নীতির মহোৎসব!পতিত সরকারের শেষ মুহুর্তে মুজিব কিল্লা প্রকল্পে তড়িঘড়ি করে বেশ কিছু প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হয়।

পিপিআর-২০০৮ অনুযায়ী দরপত্র মুল্যায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ম করেন প্রকল্পের পিডি ও ডিপিডি। কিন্তু মুজিব কিল্লায় চলছে সম্পুর্ন গায়েবি নিয়মে! এখানে অনলাইনে টেন্ডার মুল্যায়নে পিডির দায়িত্ব পালন করছেন পরিক্ষিত একজন প্রকৌশলী যিনি বিভিন্ন দুর্নীতি ও নিজ দপ্তরে স্ত্রী কাসফিয়া তামান্নার নামীয় ঠিকাদরী প্রতিষ্ঠান মেসার্স কাসিবা কন্সেন্ট্রেশন এর নামে ঠিকাদারি কাজে অদম্যভাবে নিয়োজিত। ইতোমধ্যে দেশের বহুল প্রচারিত বিভিন্ন পত্রিকায় আলোচিত সহকারী প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল্লাহেল কাফি এবং ডিপিডি প্রকৌশলী মোঃ নুরুল ইসলাম। যেসব ঠিকাদার ডিপিডি ও এপিডির সাথে উৎকোচ আদান-প্রদানে রাজি হননি তাদের করা হয় ব্যাপক হয়রানি। সর্বনিম্ন দরদাতা হওয়া স্বত্তেও শুধুমাত্র উৎকোচ নোগোশিয়েশনে ব্যর্থ হওয়ায় বেশ কিছু ঠিকাদারকে নোয়া প্রদান করা হয়নি। আর কিছু দূর্ভাগা ঠিকাদারকে নোয়া প্রদান করা হলেও শতভাগ তুষ্ট না হওয়ায় কার্যাদেশ প্রদান ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। একইভাবে বেশ কিছু ঠিকাদারকে লে-আউট প্রদান থেকে বিরত রাখা হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, পরিকল্পিতভাবে মহাপরিচালক মহোদয় নথিতে নোয়া প্রদানের অনুমোদন দেয়া সত্ত্বেও ডিপিডি ও এপিডি তাদের কাঙ্খিত চাহিদা মিটানোর আগ পর্যন্ত ইজিপি পোর্টালে নোয়া ইস্যু করেন না। তদন্ত করলে প্রতীয়মান হবে মহাপরিচালক ও হোপ অনুমোদন দেয়ার ১৫-২০ দিন পর অনলাইনে নোয়া ইস্যু করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ঠিকাদার জানান, চাহিদা পূরণ করতে না পারায় তাঁরা সর্বনিম্ন দরদাতা হওয়া স্বত্তেও তাদের প্রতিষ্ঠানের অনুকুলে নোয়া দেয়া হয়নি।

ডিপিডি প্রকৌশলী মোঃ নুরুল ইসলাম তাঁর স্ত্রী তাহমিনা আক্তার আলোর বান্ধবীর হাসব্যান্ড দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালকের সাথে পারিবারিক সখ্যতার সুযোগে তাঁর দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দুদকের মাধ্যমে ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে প্রায়শই প্রভাব বিস্তার করে থাকেন। এছাড়াও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ কামরুল হাসান এনডিসির নাম ভাঙ্গিয়ে সকলের মাঝে প্রভাব বিস্তার করেন। প্রায়শই তিনি সহকর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ দিয়ে থাকেন। তিনি তার এপিডি প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল্লাহেল কাফিসহ সকল সহকারী প্রকৌশলীদের দাপ্তরিক ম্যানার বহির্ভূতভাবে তুই বলে সম্বোধন করেন। তিনি একজন উম্মাদ এবং অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তি হিসেবে সর্বমহলে ভান ধরলেও উৎকোচ গ্রহণে অদম্য। এ অধিদপ্তরের অনেকেই তাকে আদর করে নুরু পাগলা নামে অভিহিত করেন।

অধিকতর অনুসন্ধানে জানা যায়, ডিপিডি প্রকৌশলী মোঃ নুরুল ইসলাম এর অনৈতিক নির্দেশ না মানায় ডিপিডির কথিত শালা প্রকৌশলী আনোয়ার রাশেদকে মুজিব কিল্লা প্রকল্প হতে বের হতে বাধ্য করা হয়। এছাড়া মন্ত্রনালয়ের সর্বোচ্চ কর্মকর্তার বাসায় অবাধ যাতায়াত থাকায় তিনি ধরাকে সরা হিসেবে চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর অবাধ্য হলেই অকথ্য গালিগালাজ, মানসিক ও প্রশাসনিক টর্চার শুরু হয়।

একজন দুদক মহাপরিচালকের সাথে পারিবারিক সখ্যতার গল্প শুনিয়ে সবাইকে ভীত-সন্ত্রস্ত রাখা হয়েছে। বেশ কয়েকবার ডিপিডি তাঁর অপকর্মে সহায়তা না করায় দু’জন সহকারী প্রকৌশলীকে তার কক্ষ হতে বের করে দেন এবং বদলি করার হুমকি দিয়ে থাকেন। ডিপিডি ডার সকল সরকারি সফর ঠিকাদার হতে স্বপরিবারে বিমানের টিকেট ছাড়া যান না! বিগত জুনে একটি প্রকল্প পরিদর্শন কাজে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের নিকট হতে পরিবারের সদস্যদের আসা যাওয়ার জন্য ৬৫০০০/- টাকার টিকেট কাটতে বাধ্য করেন।
শুধু এখানে শেষ নয় কক্সবাজারের বিলাসবহুল মারমেইড রিসোর্টে ডিপিডি তাঁর পরিবারসহ রাত যাপনে লক্ষাধিক টাকার বিল ঠিকাদারকে পরিশোধে বাধ্য করেন। তিনি দুর্নীতির টাকায় ঢাকার লালমাটিয়া আবাসিক এলাকায় ০২টি অভিজাত ফ্ল্যাট ক্রয় করেন। এছাড়া মোহাম্মদী হাউজিং সোসাইটিতে তার ৫ কাঠা ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ৫ কাঠার প্লট রয়েছে। গ্রামের বাড়িতে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেন। তাঁর গৃহবধূ স্ত্রীর নামে বুড়িচং উপজেলায় গড়ে তোলেন বিশাল গরুর খামার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান! সেখানে তার শতাধিক উন্নত জাতের গরু রয়েছে।

ডিপিডি মুজিব কিল্লা প্রকল্পের দুর্নীতির টাকায় তার বড়ছেলে আরিয়ানকে কিছুদিন পুর্বে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ব্যয়বহুল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার জন্য পাঠিয়েছেন। কথিত আছে তিনি ছেলের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন। সরকারী কর্মচারী হিসেবে সরকারের পুর্বানুমতির বিধান থাকলেও তিনি সন্তানকে বিদেশ পাঠানোর জন্য সরকারের অনুমতির তোয়াক্কা করেননি। মুজিব কিল্লা প্রকল্পের এপিডি কাফি তার স্ত্রীর নামে নিজ দপ্তরে ঠিকাদারি ও ডিপিডি মোঃ নুরুল ইসলাম এহেন জগন্য অপকর্মে জড়িত হলেও ফ্যাসিষ্ট হাসিনার আমলাদের ছত্রছায়ায় এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

দৈনিক পুনরুত্থান / নিজস্ব প্রতিবেদক

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন