কালীগঞ্জ পিয়ন নয়নের দাপট, টাকা ছাড়া মেলে না ভূমিসেবা
একজন পিয়নের হাতে জিম্মি ভূমি অফিস, টাকা ছাড়া মিলছে না ভুমি সেবা, সেবার নামে হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত হাজার হাজার টাকা।
ঘুষ বানিজ্যের সম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ভূমি অফিসের পিয়ন নয়ন কুমার। ভূমি সেবার নামে সাধারণ মানুষদের পকেট থেকে খসিয়ে নেওয়া হচ্ছে হাজার হাজার টাকা, নিরুপায় হয়ে কৃষকের ঘামঝড়া টাকা যাচ্ছে ঘুষ বানিজ্যের সম্রাট নয়ন কুমারের পকেটে।
সরেজমিনে অফিস চলাকালীন সময়ে জমি সংক্রান্ত সেবার নামে এমনি এক অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে নয়ন কুমারের বিরুদ্ধে। গত এক বছর থেকে এভাবেই টাকার বিনিময়ে সেবা দিচ্ছেন তিনি। বিশেষ করে কাকিনা ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ড চর এলাকা হওয়ায় আরোও বাড়তি সুবিধা করে নিয়েছেন ু পিয়ন নয়ন কুমার। ল্যাপটপ নিয়ে প্রতিনিয়ত অফিস রুমে চেয়ার টেবিলে বসে- সেবার নামে হাতিতে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা।
তিনি একজন পিয়ন হলেও ভুমি অফিসে বিভিন্ন মৌজার জমির নামজারি, জমির খাজনা-খারিজ প্রদান, অনলাইন আবেদন, পর্চা উত্তোলনসহ
একজন অফিস সহায়ক (পিয়ন) এর নিয়মিত জমি সংক্রান্ত নানা তথ্য প্রদান করেন তিনি।
একজন অফিস পিয়নের দায়িত্ব যেমন অফিস পরিষ্কার পরিছন্ন রাখা, ফাইলপত্র আদান-প্রদান, নথি সংরক্ষণ, চা- পানির ব্যবস্থা করা এবং কিছু ক্ষেত্রে, তাদের মাঠ পর্যায়ে গিয়েও কাজ করতে হয় বা হতে পারে, যেমন ভূমি জরিপের কাজে সহায়তা করা বা ভূমি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা। কিন্তু এসব কাজকে পাত্তা না দিয়ে তিনি সারাদিন ব্যক্তিগত
নির্ধারিত ফি থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে সকল প্রকার কাজ করে থাকেন। শুধু তাই নয় কাকিনা ইউনিয়নে যে ভূমি কর্মকর্তার পদায়ন হোক না কেন তিনি সবকিছু নিজের নিয়ন্ত্রনে নেন। সেইসাথে ভূমি কর্মকর্তারাও পিয়ন নয়ন কুমার কে দিয়েই তারাও নিজেদের ফায়দা হাসিল করে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ডিসিআর বাবদ টাকা নিচ্ছেন ১৫শ টাকা, অফিস নির্ধারিত ফি ১১শ টাকা বাকি ৪শ টাকা তিনি নিচ্ছেন যাতায়াত বাবদ। এমনটাই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন পিয়ন নয়ন কুমার ।
পিয়ন নয়ন কুমার কর্মজীবনে ভূমি অফিসের পিয়ন হলেও তার রয়েছে ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার।
রয়েছে রংপুর শহরে আলিশ্বান বাড়ি।
এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রাইভেট কারটি আমার শ্বশুর গিফট করেছেন।
এছাড়াও ভূমি সেবার নামে বিভিন্ন হয়রানির শিকার হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভুক্তভোগী বলেন জমি খারিজ করার নামে আমার কাছ থেকে আট হাজার টাকা নিয়েছেন। সরেজমিনে এমন অভিযোগ অনেকেরই। তবে এটি শুধু কাকিনা ভূমি অফিসের চিত্র নয় প্রতিটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসেই পিয়ন ও অতিরিক্ত লোক জনের কারনে ভূমিসেবার বদলে মানুষ এখন পড়েছে ভোগান্তিতে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যান্ড মেহেদী ইমাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে এর সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক পুনরুত্থান /
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
আপনার মতামত লিখুন: